পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা করবেন জানুন

SOHEL🌄

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা করবেন এ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না আজকের আর্টিকেলে বলা হয়েছে কেউ যদি পানিতে ডুবে যায় তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা যা করণীয় সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে নিচে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত করে নিতে পারেন

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের শুধু গ্রামের শিশুরাই নয় শহরের শিশুরাও বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে অপমৃত্যু হতে পারে তাই সবসময় এ বয়সে বাচ্চাদের সযত্নে মায়ের কাছে রাখা উচিত।

পেজ সূচিপত্রঃ পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে যা করবেন জানতে পড়ুন

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসায় যা করণীয়
পানিতে ডুবে মৃত্যুর কারণ কি
পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ যোগ্য গড়ে তোলা জন্য করণীয়
ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধারের পরে যা এড়িয়ে চলবেন
পানিতে ডোবা থেকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা
আমাদের শেষ কথা

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসায় যা করণীয়

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসায় যা করণীয় রয়েছে সর্বপ্রথমে দুই থেকে পাঁচ বছরের বাচ্চারা বেশি পানিতে ডুবে মারা যায় আর এই অপমৃত্যু ঠেকানোর জন্য সবচাইতে মায়েদের তার সন্তানের প্রতি সযত্ন হতে হবে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চাদের কখনো যেন ১০০ গজ না যেতে দেওয়া সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সময় অধিকাংশ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় এ সময় মা যখন কাজ করে তখন এই দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকে

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও ইনজুরির সার্ভিস অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিবছর প্রায় ১৭ হাজার শিশু শুধু মারা যায় পানিতে ডুবে দেখা গেছে জরিপ করে এক থেকে চার বছরের শিশুর মধ্যে মৃত্যু ঘটে এর ঘর করলে দেখা যায় প্রতিদিনই ৪৬ জন শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে আর এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে পুকুরে ওখানে বিশ্বাস করে এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসে এ ঘটনাটি বেশি ঘটে থাকে এমনকি এক থেকে দুই বছরের শিশুর অপমৃত্য পানিতে ডুবে বেশি ঘটে থাকে।

আরো পড়ুনঃশরীরে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে যা যা করবেন সে সম্পর্কে জানুন

পানিতে ডুবে মৃত্যুর কারণ কি

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা করবেন তার আগে জানতে হবে পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার কারণ কি এর বিশেষ কারণ হিসেবে বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় শুধুমাত্র সতর্কতা না থাকার কারণে এই ঘটনাগুলো ঘটে থাকে

প্রথমত পানিতে ডুবে যেতে পারে সতর্কতা না থাকার কারণে
দ্বিতীয় সাঁতার কাটা না জানার কারণে ডুবে মারা যেতে পারে
তৃতীয়তা নৌ দুর্ঘটনার কারণে পানিতে ডুবে মারা যেতে পারে
বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাসের কারণে পানিতে ডুবে মারা যেতে পারে শিশু কিংবা বৃদ্ধ মানুষ
পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার প্রথম কারণ হলো
পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার প্রথম কারণ হলো শাসক ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া পানি শ্বাসনালীতে ঢুকে যাওয়া এটাই হল মূল কারণ অথবা ফুসফুসে পানি ঢুকে মারা যায় এটা হচ্ছে অন্যতম একটি কারণ
পানি শ্বাসনালীর অনৈসিক বেশি তীব্র সংকোচনে শ্বাসনালীর মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শিশু বা যেকোন মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে
তাছাড়াও দুই থেকে তিন মিনিট শ্বাস বন্ধ থাকলে মস্তিষ্কের অপরনীয় ক্ষতি হয় আর এই ক্ষতির কারণে চার থেকে ছয় মিনিট শ্বাসক্রিয়া বন্ধ থাকলে পানিতে পাকস্থলী ফুলে যাওয়ার কারণে মৃত্যু হয়ে যায় ।

পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ যোগ্য গড়ে তোলা জন্য করণীয়

পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ করার জন্য যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে এবং করণীয় কি কি রয়েছে এ সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যায়

যদি কেউ পানিতে ডুবে যায় সে ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই প্রথমেই তাকে পানি থেকে তুলুনএবং খেয়াল করুন উদ্ধারকৃত ব্যক্তি যেন বিপদে পড়ে না যায় দুরন্ত ব্যক্তি অবলম্বন পেলে উদ্ধারকৃত ব্যক্তিকে আকড়ে ধরতে পারে আর উপরে উঠার চেষ্টা করতে পারে ফলে ডুবন্ত ব্যক্তি এবং উদ্ধারকারী ব্যক্তি দুজনেই পানিতে ডুবে মারা যেতে পারে এজন্য উদ্ধারকারী ব্যক্তিকে সাবধান থাকতে হবে

তার জন্য ডুবন্ত ব্যক্তিকে পেছন থেকে হাতসহ জড়িয়ে ধরে পানি থেকে তুলে আনতে হবে এছাড়াও লাইভ জ্যাকেট থাকলে সেটা পানিতে ছুড়ে দিও পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করা যায় আর লাইফ লাইন জ্যাকেট না থাকলে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির ওজন বহন করতে পারে এমন ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে যাওয়াই ভালো একটি বিষয় ওজনকৃত ব্যক্তি যদি ডুবে যায় তাহলে কোন ওজনওয়ালা বস্তু তার দিকে ছুড়ে মারলে বেঁচে যেতে পারে অথবা তারদিকে ঠেলা দিতে হবে যেন সে কাঠ বা বস্তুর উপরে তার ওজন ধরে রাখতে পারে

আরো পড়ুনঃ কুকুরে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ও লক্ষণ সম্পর্কে জানুন

পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করে আনার পরে উপর করে দেখতে হবে শ্বাস-প্রশ্বাস আছে কিনা নাম ধরে ডাকতে হবে যদি সাড়া দেয় তাহলে ভালো আর যদি সাড়া না দেয় সেক্ষেত্রে শ্বাস প্রশ্বাস চেক করে নিতে হবে দেখতে হবে শ্বাসনালীতে কোন কিছু আটকে আছে কিনা

এজন্য আঙ্গুল দিয়ে দেখতে হবে মুখের ভিতর কোন কাদামাটি আটকে আছে কিনা যদি থাকে তাহলে বের করে দিতে হবে তারপর শ্বাস না নিলে মাথাটা টান করে ধরে মুখ হাঁ করে এরপর উদ্ধারিত ব্যক্তি বুক ভরে শ্বাস নিতে হবে এবং ডুবন্ত ব্যক্তির মুখে সঙ্গে মুখ লাগিয়ে কোন ফাক না রেখে ফাঁস দিতে হবে উদ্ধার কি তবে একটি এরকম কয়েকবার শ্বাসদিলে যদি বুঝতে পারেন ডুবন্ত ব্যক্তির পেট ফুলে গেছে তাহলে কৃত্রিম উপায়ে সার্চ দেয়া ঠিকমতো হচ্ছে

আর খেয়াল করতে হবে যে দুরন্ত ব্যক্তি নিজের থেকে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করছে কিনা যদি করে সে ক্ষেত্রে আর শ্বাস দেওয়ার প্রয়োজন নেই

কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশাস প্রদানের পরে হাত ধরে দেখতে হবে নারের স্পন্দন ধরে দেখতে হবে যদি না থাকে তাহলে জোরে জোরে বুকের বামপাশে বাম হাত রেখে ডান হাত উপরে দিয়ে জোরে জোরে চাপ দিতে হবে যেন বুক খানিকটা দেবে যায় আর এক থেকে দুই বছর শিশুর ক্ষেত্রে শিশুর বুকে দুই হাত দিয়ে ধরে বুড়া আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিতে হবে এভাবে ৩০ বার চাপ দেয়ার পরে পূর্বের মতো দুইবার করে শাঁস দিতে হবে যদি স্বাভাবিকভাবে না আসে এরকম চক্রাকারে চালাতে থাকতে হবে

শিশুকে পানি থেকে তোলার পরে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারনে মৃত্যুর কারণ হতে পারে এজন্য শরীর রাখার চেষ্টা করতে হবে এজন্য গরম কাপড়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবংভালো করে ঢেকে দিতে হবে

শিশুর অবস্থা যদি ভালো থাকে তাহলে শ্বাস প্রশ্বাস চালু থাকে সেক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম দুধ চা ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন

আরো পড়ুনঃহাত পা অবশ হওয়ার ১৫টি কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন

ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধারের পরে যা এড়িয়ে চলবেন

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যেসব কাজগুলো এড়িয়ে চলবেন সেগুলো তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো ঝুলন জেনে নেওয়া যাক

পানি থেকে দুরন্ত ব্যক্তিকে উঠানোর পরে পেটে চাপ দিয়ে বা শিশুকে উল্টো করে পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করার অনেকে চেষ্টা করেন এগুলো মোটেও ঠিক নয় এতে করে শিশু বমি করতে পারে যা আবার ফুসফুসে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এটাও মৃত্যুর কারণ হয়ে যেতে পারে এটা কখনোই করা যাবে না

সাঁতার জানে না এমন কোন ব্যক্তিকে ডুবন্ত উদ্ধার করার জন্য উৎসাহ প্রদান করবেন না

রোগীকে ফুসফুস ও শ্বাসনালী থেকে পানি বের করার জন্য বেশি সময় না নেওয়া ভালো

প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে বিপদ কেটে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান

পানিতে ডোবা থেকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে যে সমস্ত চিকিৎসা গুলো নেওয়া দরকার সেগুলো ওপরে আর্টিকেলে তুলে ধরা হলো এখন পানিতে ডুবার আগে যে সমস্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা তুলে ধরা দরকার সেগুলো চলুন জেনে নেওয়া যাক

পানিতে ডোবা থেকে প্রতিরোধ বিষয়ে প্রথমে আপনাকে সাঁতার কাটা জানতে হবে

শিশুরা বালতি ভর্তি পানিতে ডুবে যেতে পারে এজন্য শুধু ঢুকে যেতে পারে এবং মারা যেতে পারে তাই সাবধানতার সাথে পাত্র গুলোর মুখে ঢাকনা লাগিয়ে দিতে হবে

বেড়াতে গিয়ে নদীতে কিংবা খালের পানিতে গোসলের সময় ডুবে যেতে পারেন এজন্য শিশুকে কোন অবস্থাতে জলোচ্ছ্বাহের কাছে বয়স্ক মানুষ ছাড়া দল বেঁধে ঘুরতে দিতে যাওয়া ঠিক নয়

বাচ্চার মা কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় শিশুর মৃত্যু হতে পারে পানিতে ডুবে এজন্য অন্য সদস্য শিশুর দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে

গ্রামের শিশুদের পানিতে ডোবা থেকে রক্ষা পেতে হলে পুকুরের চারপাশে বেড়া দিয়ে দিতে হবে যেন আসার জনতার কারনেও পুকুরে যেতে না পারে

নদীপথে লাইভ যাকেটের ব্যবস্থা রাখতে হবে যারা সাঁতার কাটতে জানেন না তাদের জন্য এটা অবশ্যই রাখা জরুরি

যাদের খিচুনির সমস্যা রয়েছে তারা যেন সুইমিংপুলে অথবা পুকুরে সাঁতার কাটতে না নামে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে

আরো পড়ুনঃরক্তে হিমোগ্লোবিন এর সঠিক তাপমাত্রা কত জানুন

আমাদের শেষ কথা

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা যা করণীয় সে বিষয়গুলো আজকের আর্টিকেলে সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এরপরও যদি কোন রকমের প্রশ্ন থেকে থাকে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন পুনরায় আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তা পূরণ করে দেয়া হবে

পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যে সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করা এবং চিকিৎসা করা দরকার সেগুলো পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে এই পোস্টে আপনাদের বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করে দিবেন যাতে করে তারা এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হতে পারে ধন্যবাদ।