কুয়াকাটা সাগর সৈকত গ্রামীণ সৌন্দর্য হোক পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র

লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন আপনি কি কুয়াকাটা সাগর সৈকত গ্রামীণ সৌন্দর্য পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুই আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে তাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন

কুয়াকাটা সাগর সৈকত যাকে সাগরকন্যা বলা হয়ে থাকে যা পদ্মা সেতুর মাধ্যমে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হয়েছে এজন্য যে ঢাকা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় মানুষ খুব সহজে কুয়াকাটা সাগর সৈকত যাতায়াত করতে পারছে আর এ কারণেই বৃদ্ধি পাচ্ছে দর্শনার্থী।

পেজ সূচিপত্রঃ কুয়াকাটা সাগর সৈকত গ্রামীণ সৌন্দর্য হোক পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র জানতে পড়ুন

• কুয়াকাটা সাগর সৈকত
• কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার উপায়
• কুয়াকাটা পৌঁছাতে কত সময় লাগে
• কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে কোথায় থাকবেন
• কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে কোথায় খাবেন 
• এক নজরে কুয়াকাটা দর্শনীয় স্থান সমূহ 
• আমাদের শেষ কথা

কুয়াকাটা সাগর সৈকত

কুয়াকাটা সাগর সৈকত প্রাকৃতিক রূপে রূপবতী যা  বাংলাদেশের অন্যতম জেলা পটুয়াখালীতে অবস্থিত কুয়াকাটা সাগর সৈকত  এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র সৈকতের মধ্যে এটি একটি যেখানে দাঁড়িয়ে থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় সমুদ্রকে ভেদ করে উদয় হয় সূর্য এবং সমুদ্রের মধ্যে রক্তিম রং নিয়ে বিলীন হয়ে যায় এই সূর্যমামা যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার হয়ে থাকে

কুয়াকাটা সমুদ্রের বেড়িবাধের বাম দিকে ব্যক্তিগত অর্থ খরচের মাধ্যমে তৈরি করা হয় মিউজিয়াম এখান থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে রয়েছে ফার্মস অ্যান্ড ফার্মস এটাই হচ্ছে বিশাল নারকেল বাগান এর সাথেই রয়েছে ফল ও ফুলের বাগান এ বাগানের মধ্যে তৈরি করা আছে কয়েকটি পিকনিক স্পট তার খানিকটা সামনে রয়েছে  বহুল কাঙ্খিতমাত্র  ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত  এগুলো সমুদ্র সৈকতের পূর্ব দিকে অবস্থিত এছাড়াও আছে বিশাল ঝাউ বাগান যার মধ্যে পিকনিক স্পট এর সুব্যবস্থা আছে   এখানে দলবেঁধে পর্যটকগণ বনভোজন করে থাকে এবং একে অন্যের আনন্দে এককার হয়ে যায়

ঝাউ বনের পূর্ব দিকে আগালে দেখতে পাবেন চর গঙ্গামতি লেক এলাকার একটু ভেতরের দিকেই পাবেন  সৎসঙ্গের শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুরের আশ্রম ও মিশ্রীপাড়া বিশাল আকৃতির বৌদ্ধ বিহার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চিমে লিম্বুপাড়ায় প্রতিবছরে আশিন থেকে চৈত্র মাসে গড়ে ওঠে শুটকি মাছের  মেলার পল্লী। এ শুটকি মাছের পল্লী থেকে সারা বছর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুটকি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে এখানকার জেলেরা।

আরো পড়ুনঃসুন্দরবন ভ্রমণের উপায় ও সকল তথ্যের খরচ সম্পর্কে জানুন 

কুয়াকাটা সাগর সৈকত থেকে সূর্যোদয় দেখার জন্য ঝাউ বনে যেতে হবে। এখান থেকে সূর্যোদয় খুবই স্পষ্টভাবে দেখা যায় সমুদ্রের বুক চিরে সূর্য উঠা দেখার মত আনন্দ আর কি হতে পারে যেখানে আরো হাজারো পর্যটক এক্কেবারে সকাল সকাল হেঁটে ঝাউবনে চলে আসে কুয়াকাটা থেকে আসতে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট আর অন্যান্য যানবাহনে আসলে মাত্র ১০ মিনিটে চলে আসবেন এই ঝাউবানকে সরকার বনায়নের পরিকল্পনা করেছে কারো কারো মতে সূর্যাস্ত দেখতে এখান থেকে বেশি চমৎকার মনে হয় তবে সূর্যটা সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার সময় রঙের পরিবর্তন আপনি স্পষ্টভাবে অবলোকন করতে পারবেন।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের গর্জনে সাধারণভাবে দিনের বেলায় দূরের কোন শব্দ শোনা যায় না কুয়াকাটা সমুদ্রের ভয়ঙ্কর রূপ দেখতে হলে আপনাকে রাতে সমুদ্র সৈকতে যেতে হবে নিরাপত্তার কোন ভয় নেই আপনি ইচ্ছা করলে রাতে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পারেন সমুদ্রের নিকটবর্তী হোটেল থাকলে এই গর্জন সেখান থেকে শোনা যায়

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে আপনি চাইলে দুইটি জায়গায় যেতে পারবেন নিজস্ব গাড়ি বাইকে করে আর নয়তো অন্য কোন যানবাহনে সাগরের জল রাশিতে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা তবে অবশ্যই আপনাকে লাইভ জ্যাকেট সঙ্গে রেখে লাইভ বোট পাশাপাশি স্পিড বোট ওয়াটার বাইক পছন্দ করে এই জলরাশি ঘুরতে দেখতে পারেন এছাড়াও কুয়াকাটার নিকটবর্তী যে সমস্ত জায়গা দেখার মত তার মধ্যে অন্যতম হলো ফাতরার চর আসার চর লেম্বুরচর গুরুত্বপূর্ণ যদি কেউ মনে করে আমি চর বিজয় করব তাহলে এখানে ভ্রমণ করতে পারেন সেই ব্যবস্থাও রয়েছে এ সমস্ত গ্রামীণ সৌন্দর্যের পরিবেশে তৈরি হয়েছে কুয়াকাটা সাগর সৈকত যা পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আজও এই জেলা গর্বিত।

কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলে আপনি ট্রলারে বাইস ফুটবোডে ভ্রমণ করতে পারবেন এছাড়াও সুন্দরবনের কিছু অংশ যেমন ফাতার সোনারচর কটকা হাসা চর গঙ্গামতি লেক ও সুন্দরবনের কিছু গভীরে ভ্রমন করতে পারবেন যাতে করে আপনার আত্মতৃপ্তি মিটে যায়।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার উপায়

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার জন্য আপনাকে সড়ক পথ অথবা জলপথ ব্যবহার করতে হবে তবে সড়কপথে খুব সহজেই এখন চলে আসতে পারবেন কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে

ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পদ্মা সেতু হয়ে উত্তর পূর্ব অঞ্চলের মানুষ অতি সহজে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে যেতে পারছেন আগের মতো আর ভোগান্তি নেই আবার কুয়াকাটা পৌঁছাতে সময় আগের চাইতে অনেক কম লাগে

আরো পড়ুনঃসীতাকুণ্ড ইকোপার্ক চট্টগ্রাম যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন 

ঢাকা সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি সাকুরা পরিবহন ঢাকা আরামবাগ থেকে গ্রীন লাইন পরিবহন এসি বাস পটুয়াখালী চৌরাস্তায় যেয়ে থাকে এছাড়াও ঢাকা কমলাপুর থেকে এবং গুলিস্তান থেকে বিআরটিসি এসি বাস নিয়মিত যাতাযাত করে থাকে পটুয়াখালী।

এছাড়া আপনি লঞ্চে কুয়াকাটা যেতে পারবেন ঢাকা সদরঘাট থেকে সরাসরি পটুয়াখালী লঞ্চ পাবেন এখান থেকে বাসে যেতে হবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত।

কুয়াকাটা পৌঁছাতে কত সময় লাগে

ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পৌঁছাতে পদ্মা সেতু হয়ে সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা এর আগে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা ফেরিতেই বসে থাকতে হতো ।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ঢাকা থেকে ৩৮০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা ভালো হলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় নিজস্ব গাড়ি থাকলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যেতে পারবেন 

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে কোথায় থাকবেন

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে খাওয়ার জন্য অনেকগুলো এসোসিয়েশন হোটেল রয়েছে এর বাইরেও মোটামুটি ৫৬ টি হোটেল রয়েছে এর মধ্যে প্রথম শ্রেণীর হোটেল গুলো রয়েছে ১৫ টি এখানে সর্বোচ্চ ১৫০০০ পর্যটক বিনা বিধায় রাত্রি যাপন করতে পারবে এর মধ্যে ভালো মানের হোটেল হল পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটন মোটেল

 পর্যটন হলিডে হোমস ফোন নাম্বার ০১৭ ১৫ ০০১১ ৪৮৩

এবং কুয়াকাটা ইউথ ইন ০৪৪ - ২৮ ৫৬২০৭

 এগুলো মালিকানাধীন হোটেল 

এছাড়াও 

বীজ হেভেন সাগরকন্যা রিসোর্ট লিমিটেড ফোন নাম্বার ০১৭১১ ১৮১৭৯৮

 হোটেল মোহনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড

 কুয়াকাটা গেস্ট হাউস 

হোটেল নীলাঞ্জনা ফোন নাম্বার ০১৭১২ ৯২৭৯০৪ 

হোটেল কুয়াকাটা ইন ফোন নাম্বার ০১৭৫০ ০০৮১৭৭

হোটেল বনানী প্যালেস অন্যতম ফোন নাম্বার ০১৭১৩ ৬৭৪১৯২

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে কোথায় খাবেন 

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ঘরোয়া পরিবেশে মানসম্মত খাবার পাওয়া যায় কয়েকটি হোটেলে তার মধ্যে অন্যতম হলো খাবার ঘর এক ও খাবার ঘর ২ এই দুইটি হোটেলে আবাসিক হোটেলের খাবার পাওয়া যায় 

আরো পড়ুনঃকাপ্তাই লেকে বেস্ট  হাউজ বোটে ভ্রমণের খরচ এবং সকল তথ্য সম্পর্কে জানুন

এছাড়া আপনি ছোট ছোট অনেক খাবার হোটেল পাবেন তার মধ্যে কলাপাড়া হোটেল হোটেল মান্নান হোটেল বরিশাল এসব হোটেলে খরদ কম কিন্তু মানসম্মত খাবার পাওয়া যায় ও সরবরাহ করে থাকে। 

এক নজরে কুয়াকাটা দর্শনীয় স্থান সমূহ 

• কুয়াকাটা বৌদ্ধ মন্দির 
• ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী নৌকা 
• কুয়াকাটা কুয়া 
• কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান 
• কাউয়ার চর 
• চর গঙ্গামতি 
• ঝাউবন 
• লাল কাঁকড়া চর 
• রুপালি দ্বীপ 
• বৌদ্ধ বিহার 
• মিষ্টি পানির কুপ
• রাখাইন পল্লী 
• বার্মিজ মার্কেট 
• শুটকি পল্লী 
• ঝিনুক বীজ 
• লেবুর চার 
• তিন নদীর মোহনা 
• সুন্দরবনের ফাতরার বন 
• স্বপ্ন রাজ্য 
• পাখি মারা পানি জাদুঘর 

 টুরিস্ট পুলিশ কোয়ার্টার জোন ফোন নাম্বার ০১৭৬৯ ৬৯০৭১৯

আরো পড়ুনঃক্যামেলিয়া লেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে প্রতিচ্ছবি এবং মৌলভীবাজার যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

আমাদের শেষ কথা

 প্রিয় পাঠক আপনারা আজকে আর্টিকেল থেকে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত গ্রামীণ সৌন্দর্যের পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র এছাড়াও আরো জানতে পেরেছেন কিভাবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পৌঁছাবেন এবং আবাসিক অনাবাসিক থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা সম্পর্কে 

আশা করছি আজকে আর্টিকেলটি আপনারা সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন আমাদের দেওয়া তথ্য গুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই উপকৃত হবেন তাই এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে নিয়মিতভাবে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং পোস্টগুলো  শেয়ার করে দিন যাতে করে আপনার আত্মীয়স্বজন অবসর সময় গুলো আনন্দের সহিত কাটিয়ে আসতে পারে এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।