লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

কাপাসিয়া গাজীপুর জেলা পর্যটনের সম্ভাবনার মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণে উপায় সমূহপ্রিয় পাঠক, আপনি যদি লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই আমরা আজকে লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান আপডেট সকল তথ্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবো নিচে মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিতে পারেন।

লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেক জায়গায় সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু পাননি তাই আমরা আজকে বলব আপনারা সঠিক আর্টিকেলে এসে পৌঁছেছেন চলুন নিচে লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে  সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃলাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পড়ুন

• লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান 
• লাংলোক ঝর্ণা যাবার উপযুক্ত সময়
• লাংলোক ঝর্ণা যাওয়ার উপায়
• প্রয়োজনীয় গাইড
• লাংলোক ঝর্ণা কোথায় থাকবেন
• লাংলোক ঝর্ণা কোথায় খাবেন
• লাংলোক ঝর্ণা আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
• ভ্রমণের সতর্কতা অবলম্বন
• আমাদের শেষ কথা

লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান 

লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবানের গহীন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এই ঝরনা মানুষের সম্মুখ এসেছে বর্তমানে লাংলোক ঝরনার উচ্চতা ৩৮৮ দশমিক ৯ ফুট স্থানীয়দের মতে বান্দরবানের এই ঝর্ণায় হচ্ছে সর্বোচ্চ উঁচু ঝরনা গভীর জঙ্গলে দুর্গম পথ পেরিয়ে লোকালয়ের অনেক দূরে খুব কম মানুষের চোখে পড়বে এই ঝর্ণা।চারিদিক শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল উঁচু-নিচু আঁকাবাঁকা রাস্তা বড় বড় পিচ্ছিল পাথর পেরিয়ে লাংলোক ঝর্ণায় পৌঁছাতে হয় এই ঝর্ণায় পৌঁছে  আপনার সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে তবে বিপদজনক এই রাস্তায় লাংলোক ঝর্ণা অনেক লোভনীয় যা ভ্রমণ পিপাসুদের ঝর্ণার পানিতে মনের ক্ষুধা দূর হয়ে যাবে।

লাংলোক ঝর্ণা ঝিরি থেকে সৃষ্টি হয় স্থানীয়দের মতে লাংলোক মানে হচ্ছে বাদুড় ঝরনার কাছে ঝিরির পাশে আছে একটি গুহা যেখানে অনেকগুলো বাদুড় একসঙ্গে বসবাস করে এই বাদুড়ের নাম অনুসরণ করে ঝিরির নাম করণ করা হয় লাংলোক এই ঝর্ণার জলপ্রপাত বা ঝর্নার নাম অনুসারে নাম রাখা হয় লাংলোক ঝর্ণা খুমিদের ভাষায় ঝর্ণার দেয়ালে ফিঞ্চ বসবাসরত প্রজাপতির মত দেখতে পাখির নাম অনুসরণ করে এ ঝর্ণাকে ফি ফি ক্লে বলে ডাকা হয় এই ঝরনায় মূলত বর্ষাকালে পানির প্রবাহমান বেশি থাকে এ সময় ঝর্ণার যৌবন কাল ফিরে আসে

আরো পড়ুনঃলালবাগ কেল্লা ঐতিহাসিক নিদর্শন ঢাকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

বহু মানুষের ধারণা বাক্তালাই দেশের সর্বোচ্চ ঝর্ণা কিন্তু বান্দরবানের গহীনে যে লাংলোক ঝর্ণা হঠাৎ করে মানুষের দৃষ্টিগোচর হয় তারপর থেকে বাকলায় বা বাক্তালায় এর থেকেও উঁচু ঝরনা পাওয়া যায় এপাশে একটি ছোট্ট বাদুড়ছড়া বা লাংলোক ঝর্ণা টু নামক ঝর্ণা দেখা পাওয়া যায় ।

লাংলোক ঝর্ণা যাবার উপযুক্ত সময়

লাংলোক ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকাল এ সময় ঝর্ণার যৌবন ফিরে আসে কারণ বর্ষাকালে ঝরনার পানির প্রবাহ বেশি থাকে এবং শীত মৌসুমে একেবারে ঝর্ণার পানি কমে যায় তবে আকাশের বৃষ্টি হলে ঝর্ণার পানি আবার বৃদ্ধি হয় তখন ঝর্ণা দেখতে ভালো লাগে এই ঝর্ণার আসল সৌন্দর্য দেখতে হলে আপনাকে বর্ষার সময় বা কয়েক দিন পরে যেতে হবে ঝর্ণার পানি দেখার জন্য সবচাইতে শ্রেষ্ঠ সময় হলো জুন থেকে অক্টোবর মাস এই সিজনালে ভ্রমন  পিপাসুদের ভ্রমন করে মনের আত্মার ক্ষুধা মিটানো যায় ।

লাংলোক ঝর্ণা যাওয়ার উপায়

লাংলোক ঝর্ণা যাওয়ার জন্য দুইটি উপায় রয়েছে একটি হচ্ছে বান্দরবান সদর থেকে থানচি উপজেলা উপজেলা হয়ে যাওয়া যায় আরেকটি হল বান্দরবান আলীকদম উপজেলা থেকে থানচি হয়ে যেতে পারবেন বেশিরভাগ দর্শনার্থী আলীকদম দিয়ে থামচি না যেয়ে আলীকদম থানচি রোড ২১ কিলোমিটার দূরে তিন্দু  হয়ে  লাংলোক ঝর্ণা যেয়ে থাকে।

শুধু লাংলোক ঝর্ণা দেখার জন্য থানচি থেকে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসতে পারবেন এখান থেকে ছোট ছোট ইঞ্জিন নৌকায় করে বাঘের মুখপাড়া ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা ভাড়া নিবে ঘুরে আসতে পারেন এক নৌকায় পাঁচজন করে বসতে পারবেন যাওয়ার পথে তিন্দু ও রাজা পাথর বড় পাথর এই রাস্তায় চোখে পড়বে ।

আরো পড়ুনঃ টাঙ্গাইল মধুপুর সৌন্দর্যের আসল রূপ যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন 

বাঘের মুখ পাড়া থেকে মাত্র ৫০ মিনিট টেকিং করার পরে পেয়ে যাবেন লাংলোক ঝর্ণা পাহাড়ি পথ থাকার কারণে কারো সময় বেশি লাগতে পারে আবার চারিদিক ঘন জঙ্গলের ঘেরাও উঁচু-নিচু আঁকাবাঁকা পথ পিচ্ছিল রাস্তা পেরিয়ে দুর্গম পথের প্যাকিং করা খুবই ক্লান্তিকর হয়ে পড়বে যদি সঠিক সময় পৌঁছাতে পারেন তাহলে পানির প্রবাহমান অনেক দেখতে পাবেন যা আপনার ক্লান্ত থেকে দূর করে আজীবনের জন্য একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে

তিন্দু পাড়া থেকে সাঙ্গু নদীর পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে হবে বাঘের মুখ পাড়াতে তিন্দুপাড়া থেকে বাঘের মুখপাড়া যেতে সময় লাগবে এক ঘন্টা আপনি চাইলে বিন্দুপাড়া থেকে নৌকা নিয়ে বাঘের মুখপাড়ায় যেতে পারবেন এক্ষেত্রে যাওয়া আসার জন্য ভাড়া নিবে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ।

প্রয়োজনীয় গাইড

থানচি উপজেলা থেকে আপনাকে গাইড সঙ্গে নিয়ে নিতে হবে একদিনের জন্য গাইডের ফি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা  গাইড পার্মিশনের জন্য ও নৌকা ভাড়ার জন্য সাহায্য করবে প্রয়োজনে আগে থেকে গাইড ভাড়া করে নিতে পারেন এক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবেন ।

লাংলোক ঝর্ণা কোথায় থাকবেন

লাংলোক ঝর্ণা গিয়ে কোথায় থাকবেন আপনি যদি রাত্রি যাপন করতে চান তাহলে আপনাকে তিন্দুপাড়া গিয়ে রাতে যাপন করতে হবে আদিবাসীদের ঘরে এছাড়াও আপনি চাইলে থানচি উপজেলায় ভালো মানের কটেজ পাবেন শেখানো রাতে যাপন করতে পারেন থাকার জন্য রয়েছে বিজিবিদের নিজস্ব রিসোর্ট ।

লাংলোক ঝর্ণা কোথায় খাবেন

লাংলোক ঝর্ণা দেখার জন্য খাবারের কি ব্যবস্থা রয়েছে এ বিষয়ে কোন টেনশন নাই এখানে আদিবাসীদের পাড়া গুলোতে তাদের নিজস্ব খাবার রয়েছে এখানে রয়েছে নাস্তা করার জন্য চা ভালো কিছু খেতে চাইলে ফ্রান্সই বাজার থেকে খাবার সঙ্গে নিয়ে নিতে হবে নয়তো রাত্রি যাপনের সময় তাদেরকে খাবারের অর্ডার দিতে হবে এখানে পাহাড়ি বন মোরগ সাঙ্গু নদীর মাছ ও তাদের দেশীয় খাবার রয়েছে সেগুলো দিয়ে আপনি রাত্রে খাবার সেরে নিতে পারেন।

লাংলোক ঝর্ণা আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

লাংলোক ঝর্ণা আশেপাশে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম হলো

রেমাক্রী ঝরনা

কুমারী ঝরনা

নাফাকুম ঝরনা

আমিয়াকুম ঝরনা

তমা তুঙ্গী পর্যটন স্পট

ডিম পাহাড়

এগুলো সব দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ভ্রমণ করে নিতে পারবেন

আরো পড়ুনঃহামহাম জলপ্রপাত এক প্রকৃতিক বিস্ময় মৌলভীবাজার যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

ভ্রমণের সতর্কতা অবলম্বন

বর্ষার সময় নদী উত্তাল থাকে এ সময় লাইভ জ্যাকেট নিতে ভুলবেন না

টেকিং এর সময় বা পিচ্ছিল থাকে তাই ভালো মানের স্যান্ডেল সঙ্গে নেবেন

ব্যাগ যত হালকা হয় ততই ভালো

ঝরনার পানি বেশি হলে নিচে যাওয়ার দরকার নেই এতে জীবনের ঝুঁকি বাড়তে পারে

পাথরের ওপরে সাবধানে হাঁটবেন এসব পাথর খুবই পিচ্ছিল

বড় ধরনের ঝুঁকি নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন

থানচিতে গ্রামীণ নেটওয়ার্ক পাবেন না এজন্য রবি এয়ারটেল সিম সঙ্গে রাখুন

পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখুন

জাতীয় পরিচয় পত্র বা আইডি কার্ডের ফটোকপি সঙ্গে রাখুন

যেকোনো সময় সমস্যায় পড়লে গাইডের সঙ্গে কথা বলে নিবেন

স্থানীয়দের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না 

ময়লা আবর্জনা ঝর্নার পানিতে ফেলা যাবে না

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ গাইডের কথা ছাড়া কোন রকমে বড় ঝুঁকি নেওয়া যাবে না কারণ স্থানগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ

আরো পড়ুনঃক্যামেলিয়া লেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে প্রতিচ্ছবি এবং মৌলভীবাজার যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনি জানলেন লাংলোক ঝর্ণা বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে কিভাবে যাবেন কোথায় থাকবেন কি খাবেন এবং সঙ্গে কি কি নিবেন এসব বিষয়ে খুব সহজে জানতে পেরেছেন আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এরপর যদি কোন রকমের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের  উপকৃত করা হবে

লাংলোক ঝর্ণা আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনের নিকট বেশি বেশি শেয়ার করে দিবেন যাতে করে ক্লান্তিময় কিছু সময় কাটিয়ে আসতে পারে লাংলোক ঝর্ণায় আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটকে ফলো দিয়ে সঙ্গে থাকুন আমাদের সঙ্গে এতক্ষণ থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।