বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানুন

কাটা পাহাড় বাংলার লাদাখ বান্দরবান  যাওয়ার উপায় ও খরচ সম্পর্কে জানুনপ্রিয় পাঠক, আপনি কি বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা গাইড সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ।তাহলে দেরি কেন  মনোযোগ সহকারে নিচে বিস্তারিত  পড়ে নেওয়া যাক ।

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। যা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকের কোল ঘেঁষে আসাম সীমান্তের নিকটবর্তী রোডের পাশে তৈরি করা হয়।

পেজ সূচিপত্রঃবার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা গাইড সম্পর্কে জানতে পড়ুন

• বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা
• বার্গী লেক ভ্যালি নামকরণের কারণ
• বার্গি লেক ভ্যালিতে যা যা দেখবেন
• ভ্রমণের সেরা সময়
• বার্গি লেক ভ্যালি কিভাবে যাবেন
• বার্গি লেক ভ্যালি গিয়ে কোথায় থাকবেন
• বার্গি লেক ভ্যালি কোথায় খাবেন
• আশেপাশে দর্শনীয় স্থান
• আমাদের শেষ কথা

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা

বার্গি লেক ভ্যালি (BARGEE LAKE VALLEY)  রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা । যা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। রাঙ্গামাটি সদর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই লেকের নীল জলরাশির পাশে অবস্থিত।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নৈপুণ্যতা বিশাল জলরাশির পাশে,সবুজের সমাহার প্রাকৃতিক নির্জনতা ও নিস্তব্ধতা বোট রাইডিং সুইমিংপুলের উপস্থিতি, ফুলের বাগান, কফি শপ , রেস্টুরেন্ট এবং বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য , ইকো ট্যুরিজম পার্ক ও রিসোর্ট সবমিলিয়ে এক অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারী এই বার্গী লেক ভ্যালি।

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে সৌন্দর্যের নৈসর্গিক নৈপুণ্যতা বিরাজ করছে । বর্তমানে পর্যটকরা এর সবুজ প্রকৃতির দৃশ্য ও কাপ্তাইয়ের নয়নাভিরাম সুন্দর্য উপভোগ করে । এখানে পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ সুযোগ সুবিধা রয়েছে খাওয়া-দাওয়া খেলাধুলা থেকে শুরু করে ।সমস্ত কিছুতে এখানে ক্যাম্পিং এবং কায়াকিং করার সুবিধা আছে । নির্মল বাতাস ও নির্জন পরিবেশ শান্ত নীলরাশি হতে পারে , আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্রের একটি।

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক নির্জন লেক ভিউ। পাহাড়ের হ্রদের দৃশ্য ও শান্তি নিবিড় পরিবেশ। এখানকার রিসোর্ট এর রুমগুলো অনেক সুন্দর ও পরিষ্কার ,এ রুমগুলোর একটি আদর্শ  গুণ আছে সেটা হল এই রুমগুলোর বারান্দা লেকমুখী । যেখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় ।

বার্গী লেক ভ্যালি নামকরণের কারণ

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে যাচ্ছে ।এর নামকরণ মূল কারণ হলো একসময় বার্গী বিলুপ্ত পাখি বা এই পাখির নাম থেকে এসেছে বার্গি লেক ভিউ

অর্থাৎ অতীতে কোন এক সময় এ অঞ্চলে এক ধরনের পাখি ছিল এর নাম অনুযায়ী রিসোর্ট বা পর্যটন কেন্দ্রের নামকরণ করা হয়েছে।

বার্গি লেক ভ্যালিতে যা যা দেখবেন

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনার দার উন্মোচন হয়েছে ।এলাকায় দেখার মত কি কি আছে কেনই বা এত বিখ্যাত চলুন নিচে পরিষ্কারভাবে জেনে নেওয়া যাক

কাপ্তাই লেকে চোখ জুড়ানো বিশা লেক  ভিউ

বার্গি লেক ভ্যালি অন্যতম সৌন্দর্যের আকর্ষণ হল কাপ্তাই লেক । বর্তমানে এই লেকের সামনে বিশাল হ্রদ হলো কাপ্তাই যার প্রধান আকর্ষণ । নীল জলরাশি   দূর থেকে ভেসে আশা ঢেউ সবুজ পাহাড়ের গায়ে লাগা ,ভ্রমণকারীদের জন্য সবচাইতে বেশি আনন্দের । বিশেষ করে সকালে ও বিকালের লেক ভিউ অসাধারণ সৌন্দর্যের বহন করে।

আরো পড়ুনঃবাইশারী ব্যাংডোপা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য কক্সবাজার ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানুন 

পাহাড়ের ঘন সবুজ সৌন্দর্য বিশালতা

বার্গি লেক ভ্যালি আকর্ষণীয় দিক হলো কাপ্তাই লেকের বিশাল বিশাল পাহাড়ের সারিবদ্ধতা পাহাড়ের সবুজের সৌন্দর্য পর্যটকের মনকে গহীন থেকে আনন্দে উৎসাহিত করে । এই ভ্যালির ভিতরেই তৈরি করা হয়েছে বসার স্থান এখানে ফটোগ্রাফির জন্য সবচাইতে প্রিমিয়াম ভিউ পাওয়া যায়।

সন্ধ্যার মুখরিত পরিবেশ

বার্গি লেক ভ্যালি অন্যতম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণীয় দিক হলো সন্ধ্যায় এর সৌন্দর্য আরও দ্বিগুণভাবে বৃদ্ধি পায় । সূর্যাস্তের পর লেকের ওপর ঝিলমিল আলো বিশালতা অন্যতম অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করে যেটা দার্জিলিংয়ের মতোই সুন্দর।

নৌকা ভ্রমণের সুযোগ

বার্গি লেক ভ্যালি থেকে আপনি চাইলে আরো সুন্দর্য ঘুরে দেখতে পারেন । বোট রাইডিং এর মাধ্যমে বাইরে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন । ইচ্ছা করলে লেকের নীরব জলরাশির ওপর নৌকা ভ্রমন খুবই রিলাক্সের ।যেটা আপনাকে বাড়তি আনন্দ উপভোগের সুবিধা দিবে।

ফটোশুটের আদর্শ স্থান

বার্গি লেক ভ্যালি কাপ্তাইয়ের কল ঘেঁষে তৈরি হওয়ার কারণে এই রিসোর্টের সৌন্দর্য আরো বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরো পড়ুনঃসারিয়াকান্দি কালিতলা ঘাট বগুড়া ভ্রমণ গাইড ও খরচ সম্পর্কে জানুন

আরামদায়ক কটেজ প্রাকৃতিক নিরাপত্তা । যারা শুধু একটু কোলাহলমুক্ত বিশ্রাম নিতে চান, তাদের জন্য নির্মল ও শান্ত পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে । এই কটেজটির  সৌন্দর্য উপভোগ ও ক্যামেরা বন্দি করার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত স্থান।

ভ্রমণের সেরা সময়

বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের দ্বার উন্মোচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এটাই হতে পারে এই লেকের সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম কটেজ বা রিসোর্ট, যেখানে যাওয়ার উপযুক্ত সময় হল "নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি" মাস এ সময় আবহাওয়া শান্ত ও নির্জন নিরিবিলি আরামদায়ক ।

নীল জলরাশি উপরে হাওয়া লেকে সাথে মিশে মনের গহীনে সৌন্দর্যের ছোঁয়া  দিয়ে যায় । যিনারা বর্ষাকাল পছন্দ করেন তাদের জন্য জুন আগস্ট মাস সেরা হতে পারে সেরা । বর্ষার পানির সাথে মিতালি সুর নীল জলরাশির তরঙ্গের ঢেউ সবকিছুই যেন আলাদা রকমের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে।

বার্গি লেক ভ্যালি কিভাবে যাবেন

বার্গি লেক ভ্যালি যেতে হলে প্রথমে আপনাকে ঢাকা চলে আসতে হবে ঢাকা উত্তরা ফকিরাফুল আরামবাগ সায়েদাবাদ থেকে রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনেকগুলো বাস চলাচল করে

বাসের নাম

হানিফ পরিবহন

এস আলম পরিবহন

শ্যামলী পরিবহন

ইউনিক পরিবহন

ডলফিন পরিবহন

বাসের ভাড়া এসি বাসের ভাড়া ১৩০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

এবং নন এসি বাসের ভাড়া ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যেতে সময় লাগে প্রায় সাত থেকে আট ঘন্টা

রাঙ্গামাটি সদর থেকে বার্গি লেক ভ্যালি ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে আসাম বস্তি রোডে অবস্থিত । যে এখান থেকে যে কোন সিএনজিকে বললে চলে যেতে পারবেনবার্গি লেক ভ্যালিতে। 

বার্গি লেক ভ্যালি গিয়ে কোথায় থাকবেন

বার্গি লেক ভ্যালি গিয়ে থাকার জন্য, এই রিসোর্ট টি আপনার জন্য সেরা হতে পারে । এখানে মোট ১০টি আকর্ষণীয় কটেজ আছে সেগুলো পোড়ামন , আলুটিলা , চিম্বুক , চেঙ্গী , মাধবীলতা , কৃষ্ণচূড়া , শিউলিচাপা , পদ্মা  , অপরাজিতা , পছন্দমত রুমে থাকতে পারবেন । এখানে এসি ফ্রিজ ওয়াইফাই টিভি সহ গিজার এর সুবিধা আছে ।

আরো পড়ুনঃলাসুবন গিরিখাত ভিন্ন জাগতিক পর্যটন কেন্দ্র শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ গাইড

এসব কটেজে থাকতে হলে ছয় হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হবে । একদম ফ্রিতে সকালের নাস্তা সহ ৩০ মিনিট কাই কিং করা যায় ।  আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা আছে প্রত্যেকটি কটজে বিশাল ভাবে ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে, এখানে থাকার জন্য ভাড়া আপনার হাতের নাগালে চলে আসে।

বার্গি লেক ভ্যালি কোথায় খাবেন

বার্গি লেক ভ্যালি গিয়ে খাওয়ার জন্য আপনার কোন টেনশন করার প্রয়োজন নেই । বার্গি লেক ভ্যালিতে খাবারের ব্যবস্থা আছে এখানে স্থানীয় বাংলা খাবারের স্বাদ পাবেন । পাশাপাশি জনপ্রিয় সব খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে ।

দেশীয় খাবারের মধ্যে ভাত মাছ মাংস মুরগি ডিম সবজি ভর্তা ভাজি ইত্যাদি 

থাকা খাওয়া দিয়ে জনপ্রতি মোটামুটি দুই হাজার টাকার মতো খরচ আসবে।

আশেপাশে দর্শনীয় স্থান

বার্গি লেক ভ্যালি ভ্রমণে একই খরচে আশেপাশের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে আসতে পারেন । আপনি চাইলে আজকের আর্টিকেলে নিচে আশেপাশের দর্শনীয় স্থানের নাম গুলো জেনে নিতে পারেন

দর্শনীয় স্থানের নাম

কাপ্তাই লেকে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি

রাজবন বিহার রাঙ্গামাটির বিখ্যাত বৌদ্ধবিহার শান্ত পরিবেশ ও পাহাড়ের মিশ্রণে তৈরি

হ্যাঙ্গার লেক ভিউ রাঙ্গামাটির অন্যতম শীর্ষ ভিউ পর্যটন পয়েন্ট

ঝুলন্ত ব্রিজ রাঙ্গামাটি অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারী এই ঝুলন্ত ব্রিজ পর্যটকরা সিরিয়ালে নিজেদেরকে ক্যামেরাবন্দি করতে ব্রিজের পাশে এসে ফটোগ্রাফি করে নেয় 

পেদা টিং টিং পর্যটকদের জন্য বিশ্রাম ফটো জন যাত্রা সবই আছে এখানে

পলওয়েল পার্ক আর্মিদের দ্বারা পরিচালিত এই পার্টিতে গ্রামীণ পরিবেশের বৈচিত্র তুলে ধরা হয়েছে, অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারী।

আরো পড়ুনঃরাজস্থলী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায় ও খরচ সম্পর্কে জানুন

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান একই খরচে কাপ্তাই গণভবন বন্যপ্রাণী প্রাকৃতিক নিরবতা সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন ।

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আমরা বার্গি লেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা ভ্রমণ গাইড  আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে তুলে ধরলাম। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন, এরপরও যদি আপনাদের কোন রকমের সমস্যা হয়ে থাকে। তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের সহায়তা করব ।

বার্গি লেক ভ্যালি  রাঙ্গামাটির নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সম্ভাবনা ভ্রমণ গাইড ।যদি আর্টিকেলটি  আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে , তাহলে আপনার প্রিয় বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনের নিকট শেয়ার করে দিবেন । যেন তারা ক্লান্তি ময় মুহূর্তগুলো দূরে সরিয়ে ভালো জায়গায় ঘুরে আসতে পারে । এরকম সুন্দর সুন্দর আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েব সাইটটি ফলো দিয়ে শেয়ার করে দিবেন । এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য , আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের শারীরিক সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।