সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

আগুনের পাহাড় সিলেট যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এজন্য আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে তাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন

সোনারগাঁও জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় সোনারগাঁও উপজেলায় অবস্থিত খুব কম সময়ে স্বল্প খরচে ঢাকা গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই  সোনারগাঁও জাদুঘর থেকে।

পেজ সূচিপত্র সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে করুন

• সোনারগাঁও জাদুঘর ঢাকা
• যা দেখবেন সোনারগাঁ জাদুঘরে
• ভ্রমণের সঠিক সময়
• সোনারগাঁ জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য
• সোনারগাঁও জাদুঘরে কিভাবে যাবেন
• সোনারগাঁও জাদুঘরে কোথায় খাবেন
• সোনারগাঁও জাদুঘরের আশেপাশে দর্শনীয় স্থান সমূহ 
• আমাদের শেষ কথা

সোনারগাঁও জাদুঘর ঢাকা

সোনারগাঁ জাদুঘর ঢাকা  এখান থেকে মাত্র চব্বিশ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় সোনারগাঁও উপজেলায় এ জাদুঘর অবস্থিত গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিক পুনর্জীবিত জীবন সংরক্ষণ বাংলাদেশের কারু শিল্প গড়ে উঠেছে এই সোনারগাঁও জাদুঘরে তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে সোনারগাঁও জাদুঘর

ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ১৯৯৫ সালে ১২ই মার্চ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সোনারগাঁও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পচর্য জয়নাল আবেদীন প্রথমে দিকে পানাম নগর বা পুরাতন বাড়ি হিসেবে পরিচিতি ছিল সেটা পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা জায়গা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পরিচয় তুলে ধরার জন্য এই জাদুঘর তৈরি করেন।

আরো পড়ুনঃবৃষ্টির দিনে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য যা করণীয় জানুন

যা দেখবেন সোনারগাঁ জাদুঘরে

সোনারগাঁও জাদুঘরে প্রবেশ করলে প্রথমে চোখে পড়বে ১০০ বছরের পুরাতন এক অট্টালিকা এই অট্টালিকায় বড় সরদার বাড়ি নামে পরিচিত লাভ করে

এবং এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে দুইটি প্রাচীন স্থাপত্যের বড় নিদর্শন ঘোড়ার ভাস্কর্য জাদুঘরের শিল্পোচার্য জয়নাল আবেদীন তৈরি করেছিলেন গরুর গাড়ির ভাস্কর্য  যা দেখলে যেকোনো পর্যটকদেরই মনে মধ্যে আকর্ষণ তৈরি করবে

সরদার বাড়ির মোট দশটি গ্যালারি এই গ্যালারি গুলো তৈরি করা হয়েছে কাঠ দিয়ে এবং কাঠের উপরে কারু শিল্প পাট চিত্র ও মুখোশ এবং বিভিন্ন আদিবাসী জীবন ভিত্তিক নিদর্শন আর লোকজীবনের লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়া মাটির নিদর্শনাবলী

এছাড়াও আছে তামা পিতল কাঁসার নিদর্শন ও লোহার তৈরি নিদর্শনাবলী এবং লোকজ অলংকার  এ ভবনটির পূর্ব পাশে রয়েছে লোকজ স্থাপত্য কলার প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদীনের স্মৃতি জাদুঘর এছাড়াও দুটি গ্যালারি  আছে এই গ্যালারি দুটো কাঠের তৈরি যা প্রাচীন নিদর্শনের আধুনিককালের নিদর্শনসমূহ মিক্স করে তৈরি করা গ্যালারি বাইরে আছে আধুনিককালে নিদর্শন ও পাঠাগার সেন্টার এবং সেমিনার হল ও ক্যান্টিন

আরো পড়ুনঃপানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে যা করবেন জানুন  

জাদুঘরের উদ্যানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের গাছ মনোরম পরিবেশ লেক লেকের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা এবং মৎস্য শিকারের সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে এই জাদুঘরে নৌকার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌকা রয়েছে সেটি হচ্ছে পঙ্খিরাজ নৌকা

জাদুঘরের মধ্যে দেখতে পাবেন কার শিল্প ও গ্রাম ্য জীবন যাত্রা  সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে মনোরম স্থাপিতের ঘর যা বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অজানা তথ্য আছে এই ঘরে কারু শিল্প দ্বারা তৈরি করা হয়েছে

দক্ষ কারু শিল্পী দ্বারা তৈরি করা হয়েছে বাঁশবেতের কাঠ খোদায় জামদানির কাট নকশা এবং নকশি কাঁথা পাট শিল্প ঝিনুক শঙ্খ শিল্প রেশম শিল্প একতারা ইত্যাদি যা দেখলে আপনার মন আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে চাইলে আপনি এগুলো ছুটির দিনে উপযুক্ত সময় করে ঘুরে আসতে পারেন

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য সাক্ষী হিসেবে এই জাদুঘর প্রতিনিয়তই বাঙালির মনে জায়গা করে নিয়েছে এবং ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় প্রতীক হয়ে আছে।

ভ্রমণের সঠিক সময়

সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার জন্য সঠিক সময় হল সপ্তাহের যেকোনো পাঁচদিন আপনি যেতে পারবেন শুধুমাত্র বুধবার বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে আপনি শীত মৌসুমে সোনারগাঁ জাদুঘরে গেলে বেশি আনন্দ ভোগ করতে পারবেন শীতের কুয়াশায় চাদরে ঘেরা এই সোনারগাঁ জাদুঘর সৌন্দর্যের মনোরম পরিবেশে আরো বাড়িয়ে  দিবে

সকালবেলা ঘুরে দেখার জন্য উপযুক্ত সময়এবং ফটোগ্রাফি করার জন্য ও উপযোগী হল এই সকালবেলা আবহাওয়া যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর যদি আপনি গরমে ঘুরতে আসেন সে ক্ষেত্রে নরম জুতা ব্যবহার করবেন ও পানি সঙ্গে রাখবেন

আরো পড়ুনঃরাগ কমানোর চমৎকার সাতটি উপায় সম্পর্কে জানুন

সোনারগাঁ জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য

সোনারগাঁ জাদুঘরের প্রবেশ করার জন্য আপনাকে কিছু মূল্য দিতে হবে জনপতি প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা তবে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জনপতি ৩০ টাকা করে ফি জমা দিতে হবে

এটি  সপ্তাহে পাঁচ দিনে খোলা থাকে সকাল নয়টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত তবে জেনে রাখা ভালো বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এ জাদুঘর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে

সোনারগাঁও জাদুঘরে কিভাবে যাবেন

সোনারগাঁ জাদুঘরে যাওয়ার জন্য আপনাকে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা যেতে হবে এখান থেকে যে কোন রিস্কা চড়ে বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে পৌঁছে  ভাড়া দিতে হবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা

নিজের প্রাইভেট গাড়ি থাকলে খুব তাড়াতাড়ি কম সময়ের মধ্যে আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন বাংলাদেশ কারু শিল্প ফাউন্ডেশনে

কোথায় খাবেন

সোনারগাঁও জাদুঘর ভ্রমণে আপনি খাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরে চলে আসতে পারেন এখানে ভালো মানের খাবার পেয়ে যাবেন তাছাড়াও সকালের নাস্তা আপনি এখান থেকেও করে নিতে পারেন আবার রাতের খাবার ঢাকায় গিয়েও খেতে পারেন আর দুপুরের খাবারের হিসাব করলে আপনি এখানে গ্রামীন কিছু খাবার হোটেল পাবেন ইচ্ছা হলে পছন্দ মতো খেয়ে নিতে পারেন

সোনারগাঁও জাদুঘরের আশেপাশে দর্শনীয় স্থান সমূহ 

সোনারগাঁ জাদুঘরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থান রয়েছে সেগুলো থেকে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন তার মধ্যে অন্যতম হলো

পানাম নগর

 ঐতিহাসিক প্রাচীন নগরী বা হারানো নগরী নামে অভিহিত

গোলাদি মসজিদ

 ১৫ তম শতাব্দীর সুলতান শৈলী জাদুঘরের কাছাকাছি এক গম্বুজ ওয়ালা মসজিদ রয়েছে এখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন

মোজামপুর শাহী মসজিদ

 মধ্যযুগীয় ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ রয়েছে মোজামপুরে এটি ১৪৩২ থেকে ১৪৩৬ নির্মিত হয়

মগরা পাড়া ও ফাৎসা মসজিদ

ঐতিহাসিক ইসলামিক স্তম্ভ গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপত্য হল মগরা পাড়ার  ফাৎসা মসজিদ আপনি এ সমস্ত স্থানে  ভ্রমণ করলে বহুকাল আগের স্থাপত্য সামগ্রী অনুধাবন করতে পারবেন

আরো পড়ুনঃসাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

আমাদের শেষ কথা

সোনারগা জাদুঘর যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আমরা আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য তুলে ধরেছি  আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন এরপর যদি কোন রকমের তথ্য জানার   থাকে সেক্ষেত্রে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে  জানিয়ে দেওয়া হবে

সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার জন্য আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনের নিকট আজকের এই আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিবেন যাতে করে অবসর সময়ে সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে আসতে পারে এই সোনারগাঁও জাদুঘরে  ঘুরে আসা একবার হলেও আমাদের উচিত ধন্যবাদ।