নাফাকুম জলপ্রপাত থানচি বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

অপূর্ব সৌন্দর্যে ভরা তারুয়া সমুদ্র সৈকত ভোলাগঞ্জ যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুনআপনি কি নাফাকুম জলপ্রপাত  মিলবে কষ্টের পরে সুখের স্বস্তিভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ  তাই সময় নষ্ট না করে নিচে মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিতে পারেন

নাফাকুম জলপ্রপাত বাংলাদেশের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এক ভ্রমণ যাত্রা যাকে নোয়াগ্রা ফলস নামে অবহিত করা হয় যেটা থানচি উপজেলা বান্দরবান জেলায় এবং রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত। 

পেজ সূচিপত্রঃনাফাকুম জলপ্রপাত  ভ্রমণ গাইড মিলবে কষ্টের পর সুখের স্বস্তি জানতে পড়ুন

• নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণ গাইড
• নাফাকুম জলপ্রপাতের  নামকরণ
• নাফাকুম ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কখন
• নাফাকুম জলপ্রপাতে যাওয়া আসায় যা যা দেখবেন
• নাফাকুম জলপ্রপাত যাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন
• নাফাকুম জলপ্রপাত কিভাবে যাবেন
• নাফাকুম জলপ্রপাত গিয়ে কোথায় থাকবেন
• নাফাকুম জলপ্রপাত কোথায় খাবেন
• নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণে সতর্কতা টিপস সমূহ
• নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণে সঙ্গে যা যা নিবেন
• নাফাকুম জলপ্রপাত আশেপাশের দর্শনীয় স্থান 
• উপসংহার

নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণ গাইড

নাফাকুম জলপ্রপাত বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার ইউনিয়নে অবস্থিত এইখানে বাংলাদেশের অন্যতম বড় ওয়াটার ফলস  হয়ে থাকে যার সৌন্দর্য দেখার জন্য বাংলাদেশের বহু পর্যটক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফাকুম জলপ্রপাতে এসে থাকে অনেকে একে বাংলার নায়াগ্রা জলপ্রপাত হিসেবেও আখ্যা দিয়ে থাকে সত্যি কথা বলতে নাফাকুম জলপ্রপাত খুবই দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয় যেখানে জীবনের ঝুঁকি পর্যন্ত নিতে হতে পারে তাইতো বলা হয়েছে কষ্টের পরে মিলবে সুখের স্বস্তি যদি কষ্ট করে থাকেন তাহলে পাবেন সত্যিকার অর্থে সুখের দেখা

বান্দরবান থেকে সারাদিনের যাত্রা করে আসবেন থামছি উপজেলায় এখান থেকে যেতে হবে রেমাক্রি তিন ঘন্টার রাস্তা পাবেন রাস্তায় অনেক রকমের রহস্যময় আনন্দ নাফাকুম জলপ্রপাতের ঝর্ণাধারার পানি পাহাড় থেকে নিচে নেমে গেছে ২৫ থেকে ৩০ ফুট এ পানির জলীয় বাষ্প আকাশের দিকে উঠে বিভিন্ন রকমের রংধনু সৃষ্টি হয় যারা ভ্রমন পিপাসু তাদের জন্য ঘন সবুজ বনের পাহাড়ের উপরে ঝর্ণার মধ্যে ভিজে ট্যাকিং করা 

আরো পড়ুনঃ দাওধারা গারো পাহাড় নতুন পর্যটন কেন্দ্রর সম্ভাবনা নালিতাবাড়ী শেরপুর

আদিবাসীদের সঙ্গে মিশে বিভিন্ন বৈচিত্র্যের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে সাঙ্গু নদীর ভয়ংকর রূপ দর্শন করে পৌঁছাতে হয় এক প্রাকৃতিকগতভাবে পাথরের উপরে টলমলে আয়নার মতো স্বচ্ছ নীল পানির ঝরনা প্রকৃতির নির্জন সৌন্দর্য ও জলপ্রপাতের গর্জন পাহাড়ি জীবনের স্বাদ উপভোগ করার মতো একমাত্র জায়গা হবে নাফাকুম জলপ্রপাত।

নাফাকুম জলপ্রপাতের  নামকরণ

নাফাকুম জলপ্রপাত এর নাম করার কারণ এর মধ্যে স্থানীয়দের মধ্যে একটি সুন্দর ইতিহাস ব্যাখ্যা করা হয় যার মাধ্যমে নাপাককম জলপ্রপাত নামকরণ করা হয় তো চলুন কি ছিল তাদের ইতিহাসে নিচের জেনে নেওয়া যায়

নামের উৎপত্তিস্থল শব্দটি মারমা ভাষার শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় নাফা শব্দের অর্থ কাঁপানো পানি বা প্রবাহিত পানি এবং শব্দের অর্থ হলো ঝরনা বা জলপ্রপাত একত্রে নাপাকুম শব্দের অর্থ হলো যে স্থানে পানি ঝাঁপিয়ে পড়ে যার অর্থ প্রকৃতভাবে এটাই বুঝায়

মারমা উপজাতিরা উপর থেকে ঝরনার পানি নিচে খুম খুম শব্দে ঝাঁপিয়ে পড়ে এ থেকে এই ঝর্ণার নামকরণ করা হয় নাফাকুম জলপ্রপাত ।

নাফাকুম ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কখন

বান্দরবান জেলার খানচি উপজেলার নাপাকুম জলপ্রপাত এক বিস্ময়কর অ্যাডভেঞ্চার  যার জন্য এই থানচি উপজেলার পরিচিতি নাফাকুম জলপ্রপাতে সবচাইতে যাওয়ার আদর্শ সময় হল শীতকালের আগ মুহূর্তে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর বর্ষাকালে সাঙ্গু নদী ভয়ংকর রূপ ধারণ করে অর্থাৎ ঝর্ণার পানি সাঙ্গু নদী পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলে যে কারণে এ সময় প্রশাসন কর্তৃক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে আপনাকে প্রকৃতি ভালো লাগবে শীতের আগ মুহূর্তে যা জীবনের যেখানে ভ্রমন করুন না কেন এ নাফাকুম জলপ্রপাতের কথা সারা জীবন মনে রাখতে হবে।

নাফাকুম জলপ্রপাতে যাওয়া আসায় যা যা দেখবেন

নাফাকুম ওয়াটার ফলস যেতে হলে থানচি থেকে রেমাক্রি এখান থেকে নাফাকুম জলপ্রপাত তবে বান্দরবান থেকে শুরু হয়ে যাবে প্রকৃতির মহিমা দেখা দেখতে পাবেন

 নীলগিরি নীলাচল পর্যটনকেন্দ্র

বান্দরবান থেকে সৌন্দর্যের মহিমা দেখতে দেখতে পৌঁছে যাবেন পাহাড়ের অজান্তে  নীলগিরি পাহাড় এখানে বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ভিউ দেখতে পাবেন এর কিছুদূর পরে পেয়ে যাবেন নীলাচল যাকে মেঘের রাজ্য হিসেবে আখ্যা দেয়া হয় যেখান থেকে পুরো বান্দরবান শহর আপনি নিজের চোখে দেখতে পাবেন এজন্য নীলাচল কে বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রের মাথায় বলা হয়।

চিম্বুক পাহাড় বান্দরবান

থানচি যাওয়ার পথে দেখতে পাবেন চুম্বক পাহাড় সাপের মতো প্যাচানো রাস্তা মনের ভিতর গহীন ভয়ের সঞ্চর নিয়ে ধীরে ধীরে এগোতে হয় এই চিম্বুক পাহাড়ের রাস্তা কখনো মনে হয় রাস্তা পাহাড়ের নিচের দিকে নেমে চলে গেছে আবার কখনো মনে হয় রাস্তা পাহাড়ের উপরের দিকে উঠে চলে যায় এটা একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতার অনুভূতি পুরো এলাকায় মনে হয় এক একটা প্রাকৃতিক  ক্যানভাসে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ।

বম ও মারমা উপজাতির জীবন যাত্রা

থানচি উপজেলায় পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে দেখতে পাবেন বিভিন্ন রকমের উপজাতিদের ঘরবাড়ি ও জীবনযাত্রার মান তাদের সংস্কৃতি চলাফেরা ভাষা গত দিক সবকিছুই আপনাকে নতুন এক জায়গায় এসে দাঁড় করাবে এখানে তাদের সঙ্গে আপনাকে নম্রতা শহীত সমস্ত কাজ সম্পাদন করতে হবে তাদের পোশাক-আশাক চলাফেরা রীতিনীতি আপনাকে হতভাগ করে তুলবে কিন্তু কখনোই তাদের সঙ্গে পোশাক আশাক নিয়ে মজা করা যাবে না এটাই তাদের সাংস্কৃতিক রীতি নীতি তাদের খাদ্য খাবার সম্পূর্ণ আলাদা।

থানচি থেকে রেমাক্রি নৌ পথে যাত্রা

নাফাকুম জলপ্রপাত দেখার জন্য প্রথমে আপনাকে থানচি উপজেলা আসতে হবে এখান থেকে আপনার যাত্রা শুরু নৌপথে যাত্রা হবে দুর্গম পথ তবে প্রতিটি পয়েন্ট হবে আপনার জন্য মনোমুগ্ধকর

থানচি উপজেলার নিচে সাঙ্গু নদী বয়ে গেছে এখানে এসে আপনাকে ছোট্ট ছোট্ট  নৌকায় চড়তে হবে সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ জন তার বেশি নৌকায় চড়া যাবে না সাঙ্গু নদীর বুক চিরে চলবে নৌকা যেতে যেতে পাথরের তীর ও ছোট্ট ছোট্ট পাহাড় বুক চিরে প্রবাহিত সাংঘ নদীর মধ্য দিয়ে যেতে হবে আপনাকে তিন ঘন্টা রাস্তা পথিমধ্যে পড়বে পাহাড়ি গ্রাম রাজা পাথর দুই পাহাড়ের মধ্যে বয়ে চলা সাঙ্গু নদী পাহাড়ের উপরে ঘন সবুজ বন বিভিন্ন প্রজাতির দেখা মিলবে সেখানে যেমন বানর বিভিন্ন বিদেশি পাখি দেখতে দেখতে কখন যেন চলে আসবেন 

আরো পড়ুনঃলালদিয়া সমুদ্র সৈকত বরগুনা ভ্রমণ গাইড এবং খরচ সম্পর্কে জানুন

রেমাক্রি ঝর্ণায় দেখবেন আশ্চর্য জনিত এক ঝরনা এ যেন এক কাশ্মীর দর্শনের মত যেখানে বয়ে চলছে অবিরত ঝর্ণাধারার পানি এখানেই পাবেন বোম ও মারমা উপজাতির সাংস্কৃতিক জীবনধারা যেখানে তারা গোসল করে এই পানি দ্বারা খায় এবং সর্ব কাজেই ব্যবহার করে ঝরনাটি উচ্চতা কম হলেও নিচের দৈর্ঘ্যটা অনেক বড় এখানে দর্শনার্থীরা এসে অনেকে বিশ্রামাগার করে তারপরে নাপাকুম জলপ্রপাত যেয়ে থাকে ।

 রেমাক্রি থেকে নাপাকুম ঝরনা পর্যন্ত

নাফাকুম জলপ্রপাত পৌঁছানোর আগ দিয়ে আপনাকে কিছু সুন্দর্য উপভোগ করতে করতে যেতে হবেপ্রতিমধ্যে পাবেন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সরুপথ এই পথের মধ্যে হেঁটে যাওয়া শুরু পথ আবার কখনো পাথরের পথ আবার কখনো পিচ্ছিল পাথরের রাস্তা কখনো উঁচু কখনো নিচু কখনো পানির গর্ত যেতে হবে 

অনেক দূর এর মধ্যে পেয়ে যাবেন বনফুল বনের গন্ধ চারিদিক মাতোয়ারা পাহাড়ি ঝর্ণার ধ্বনি শুশু শব্দ এই ঝর্ণার কাছে পৌঁছানোর আগে আপনাকে পাড়ি দিতে হবে প্রবল ঢেউয়ের রাস্তা যার মধ্যে দিয়ে আপনাকে হেঁটে যেতে হবে ভিজে যাবে যা আছে শরীরের জামাকাপড় স্রোতের শর্ত ধারায় পড়তে পারেন বিপদে এজন্য সবসময় গাইডের সঙ্গে থাকবেন আর এখান থেকে পেয়ে যাবেন নাপাকুম জলপ্রপাতের অনুভূতি ।

নাফাকুম জলপ্রপাত মিললো কষ্টের পর সুখের স্বস্তি 

নাফাকুম জলপ্রপাত কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে পৌঁছে যাবেন এখানে এসে আপনার মনের সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দিবে ঝরনার পানিতে দেখবেন চারিদিকে শুধু ঘন জঙ্গল আর জঙ্গল মধ্যখানে একফালি বিশাল বড় ঝর্ণা যার শব্দে মাতোয়ারা সমস্ত বনের পশুপাখি এখানে এসে আপনার মনের অজান্তে কল্পনাতে হারিয়ে যাবেন অন্য কোন দেশে হতে পারে সেটা কাশ্মীর কিংবা সুইজারল্যান্ড 

যাই হোক চারিদিকে তৈরি হয়েছে ছাঙ্গু নদী সাঙ্গো নদীর উৎপত্তি স্থল হল নাপাকুম জলপ্রপাত সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় এর আশেপাশে গান-বাজনা বিভিন্ন ছন্দ যত রাত্রি হয় ততই বাড়ে আনন্দ আর আনন্দ যেখানে মনের সব আবেগ ভালোবাসা উৎসর্গ করে আপনার মনে যা চায় তাই একে দিতে পারেন সব মিলিয়ে এক নৈসর্গিক স্বর্গরাজ্য তৈরি হয় এই নাপাকুম জলপ্রপাতে মনে যেমন ভয় তেমনি আনন্দ যার মুখে বলে বোঝানো যাবে না 

যদি কখনো সময় হয় অবশ্যই একবার হলেও এখানে গিয়ে ঘুরে আসবেন বাংলাদেশ এত সুন্দর আর কোথাও এত বড় ঝর্ণাধারা দেখতে পাবেন না তাই এখানে দর্শনার্থীরা এসে আনন্দে নিজের মনের আবেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন রকমের গান গেয়ে যায় এ ঝরনার সাথে তাল মিলিয়ে ।

নাফাকুম জলপ্রপাত যাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন

নাফাকুম জলপ্রপাত যাওয়ার উপযুক্ত সময় হল শীতকালে বর্ষার সময় নদী আকারে বড় হয় এবং আকার ধারণ করে ভয়ংকর পানির ঢেউ দ্বিগুণ হয়ে বেড়ে ওঠে যাওয়া মুশকিল এজন্য এখানকার যারা দায়িত্বে আছেন তারা এ সময় নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণে অনুমতি দেন না আর শীতের দিনে নদী শুকিয়ে ছোট হয়ে যায় নাফাকুম জলপ্রপাত যাক খুবই সহজ হয় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এর মাঝামাঝি সময়ে গেলে বনের প্রাকৃতিক ঘনসবুজ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন ।

নাফাকুম জলপ্রপাত কিভাবে যাবেন

নাফাকুম জলপ্রপাত জলপ্রপাত যাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হবে এবংকিভাবে যাবেন চলার নিচে জেনে নেওয়া যাক

ঢাকা থেকে বান্দরবান

ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান সদরে বাসে এসে পৌঁছাতে হবে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকটি পরিবহন সরাসরি বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে তার মধ্যে অন্যতম হলো শ্যামলী হানিফ ইউনিক এস আলম ডলফিন ইত্যাদি 

রাত্রি দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত কলাবাগান সায়েদাবাদ এবং ফকিরা পুল বাস টার্মিনাল থেকে বান্দরবানে যেতে পারবেন নন এসি বাসের ভাড়া জনপ্রতি  ৫৫০ এবং এসি বাসের ভাড়া ৯৫০ টাকা আপনার সুবিধামতো কাউন্টার থেকে টিকিট ক্রয় করে সকালের মধ্যে বান্দরবান পৌঁছে যাবেন ।

বান্দরবান থেকে থানচি

বান্দরবান থেকে পাবলিক বাস কিংবা জিপে অথবা চান্দেরগাড়িতে করে পৌঁছে যাবেন থানচি উপজেলায় একটা কথা মাথায় রাখবেন সবসময় বাস জনপ্রিয় নয় এখানে সবচাইতে জনপ্রিয় হলো চান্দের গাড়ি এবং জীপ আঁকাবাঁকা সবুজ ঘন জঙ্গল কখনো উঁচু কখনো নিচু পথ পৌঁছে যাবেন থানচি বাজারেএখানে এসে হালকা-পাতলা নাস্তা করে নিয়ে আবার রওনা দিতে হবে সাঙ্গু নদীর বুক চিরে  রেমাক্রি বাজার এর মধ্যে রাস্তায় পাবেন অন্যরকম অভিজ্ঞতা যা কখনো ভুলার নয় ছোট্ট ছোট্ট ভুটভুটি নৌকা চার থেকে পাঁচ জনে ডিঙ্গি নৌকায় থানচি থেকে পৌছে দিবে রেমাক্রি বাজার ।

রেমাক্রি বাজার থেকে নাপাকুম জলপ্রপাত

রেমাক্রি বাজারে নেমে দুই ঘন্টার পায়ে হাটা রাস্তা ঘন সবুজ বন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে যেতে হবে নাফাকুম জলপ্রপাত পথিমধ্যে পাবেন কাশবন বিভিন্ন রকমের জঙ্গলের গাছ পেরিয়ে হঠাৎ সামনে পড়বে সাঙ্গ নদী হাঁটুর উপরে পানি এই পানিকে উপেক্ষা করে যেতে যেতে রাস্তায় পাবেন ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটি চায়ের দোকান হঠাৎই মনের ভেতরে আনন্দিত উপভোগ করবেন সেখান থেকে আবার হাঁটা শুরু হবে হালকা নাস্তা পানি করে এরপরে নাফাকুম জলপ্রপাতের শব্দ শুনতে পাবেন মনে একটা আশার আনন্দ ঢেউ খেলে যাবে পেয়ে যাবেন স্বপ্নে  নাফাকুম জলপ্রপাত।

নাফাকুম জলপ্রপাত গিয়ে কোথায় থাকবেন

নাফাকুম জলপ্রপাত গিয়ে থাকার কোন চিন্তা কারণ নাই এখানে উপজাতিরা পর্যটনদের জন্য কয়েকটি মাচান বা ঘর তৈরি করেছে থাকার মত সেখানে বিভিন্ন রকমের সুবিধা তারা দিয়ে থাকে রাত্রিযাপনের জন্য  পর্যটনদের সেবায় তারা সবসময় নিয়োজিত তবে খরচ খরচা মোটামুটি ভাবে একটু বেশি

এখানে থাকতে হলে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত জনপদে রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া দিতে হবে এছাড়াও কয়েকজনের গ্রুপ ভ্রমণ হলে টাকা একটু কম লাগবে তবে গাইডের সাথে কথা বলে নিলে পর্যটকদের জন্য খুবই ভালো সুবিধা পাবেন আগে থেকে আপনাদের রুম বুকিং সহ রাতের খাবারের ব্যবস্থা করবে যারা সেখানে থাকতে চান না তারা তবু টাঙ্গিয়ে ক্যাম করেও থাকতে পারেন এজন্য আপনাদেরকে বাড়তি খরচ বহন করার প্রয়োজন নেই তবে শীতকাল হলে কিয়াম করার জায়গা অনেক পাবেন কিন্তু অন্য সময় কাম করার জায়গা পাবেন না ।

নাফাকুম জলপ্রপাত কোথায় খাবেন

নাফাকুম জলপ্রপাত থাকার কোন অসুবিধা নেই তেমনি খাওয়ার কোন অসুবিধা নেই এখানে গাইডের সঙ্গে কথা বলে নিলে রুমসহ খাবারের ব্যবস্থা করবে অগ্রিম কথা বলাই ভালো খাওয়ার জন্য পাবেন তাদের পাহাড়ি বন মুরগি এবং ভাত ডাল সবজি সহ বিভিন্ন রকমের তরী তরকারি যা দর্শনার্থীদের জন্য উপযুক্ত খাবার হিসেবে গণ্য করা যায়।

নাফাকুম জলপ্রপাত ও পর্যন্ত আনুমানিক একটি খরচ

ঢাকা থেকে বান্দরবান বাসের ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এসি বাসের ভাড়া

বান্দরবান থেকে চান্দের গাড়ি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা 

থানচি থেকে রেমাক্রি  একটি নৌকায় মোট পাঁচজন বসবে ৪৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিবে জনপ্রতি ১০০০ টাকা করে পড়বে

গ্রুপে গাইডে বেতন ১৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা লাগবে

রেমাক্রি থাকার খরচ ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা

সকাল এবং দুপুরের খাবার ২০০ থেকে ৩০০ টাকা

আনুমানিক মোট খরচ পড়বে ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত জনপ্রতি

 তিন দিন দুই রাতের খরচ লাগবে

নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণে সতর্কতা টিপস সমূহ

বর্ষার সময় গেলে অবশ্যই সঙ্গে লাইভ জ্যাকেট নিবেন আর বর্ষার সময় না যাওয়াই ভালো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ

টেকিং এর জন্য ভালো মানের গ্রিপসের জুতা নিবেন

পিচ্ছিল রাস্তায় সাবধানে হাঁটা চলাফেরা করবেন সঙ্গে অবশ্যই একটি লাঠি  রাখবেন

কম খরচে ভ্রমণ করতে চাইলে ছুটির দিন বাদ দিয়ে ভ্রমন করুন

মোবাইলে ভালো করে চার্জ দিয়ে নিন

এখানে গ্রামীণফোন ও অন্যান্য ফোনে নেটওয়ার্ক পাবে না এজন্য রবি সিম সঙ্গে অবশ্যই রাখবেন

সময়ের সঙ্গে খেয়াল রাখবেন 

আরো পড়ুনঃলালদিয়া সমুদ্র সৈকত বরগুনা ভ্রমণ গাইড এবং খরচ সম্পর্কে জানুন

দল ছেড়ে কোথাও একা কোথাও যাবেন না

ছোট বাচ্চা কিংবা বয়স্ক মানুষ নিয়ে দূর্গাম পথে ভ্রমণ না করাই উচিত

ফেরার পথে অবশ্যই নীলগিরি নীলাচল ঘুরে আসবেন

যত ব্যাগের ওজন কম হবে ততই আপনার জন্য স্বস্তি যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না এতে পরিবেশ নষ্ট হবে

এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই তার আগের থেকে বিদ্যুতের যত সরঞ্জাম আছে সবগুলোকে সঠিকভাবে চার্জ দিয়ে নিয়ে যাবেন ।

নাফাকুম জলপ্রপাত ভ্রমণে সঙ্গে যা যা নিবেন

জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সঙ্গে দুই কপি ছবি

ট্র্যাকিংয়ের জন্য জুতো

Backpack ওয়াটার প্রুফ

প্লাস্টিক ব্যাগ ক্যামেরা মোবাইল পোশাকাদি শুকনো জামা কাপড় রাখার জন্য

টচ লাইট সঙ্গে অবশ্যই রাখতে হবে

মোবাইলের চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক এক সঙ্গে রাখতে হবে তবে না পৌঁছালে চার্জে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে

অতিরিক্ত জামাকাপড় সঙ্গে নিবেন 

রেনকোট সঙ্গে রাখবেন

প্রাথমিক চিকিৎসায় ওষুধপত্র সঙ্গে রাখবেন

মশা নিরোধক স্প্রে সঙ্গে রাখবেন

শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানে বোতল সঙ্গে রাখবেন ।

নাফাকুম জলপ্রপাত আশেপাশের দর্শনীয় স্থান 

নাফাকুম জলপ্রপাতের আশেপাশে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান রয়েছে চলুন সেগুলো নাম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

রেমাক্রি ঝরনা

আমিয়াখুম জলপ্রপাত

সাতভাই খুম জলপ্রপাত

থানচি বাজার ও সাঙ্গু নদী মোহনা

তিন্দু নদী পাহাড় পাথরের স্বর্গরাজ্য বলা হয়

নীলগিরি

বগালেক

কেও ক্রাডং পা

বেতাঝুরি ঝরনা

আরো পড়ুনঃমহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের  জন্মভিটা মধু পল্লী ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানুন

উপসংহার

আজকের আর্টিকেলটি নাফাকুম জলপ্রপাত  ভ্রমণ গাইড মিলবে কষ্টের পর সুখের স্বস্তি সম্পর্কে আমরা সঠিক তথ্য আপনাদের প্রয়োজনে তুলে ধরেছি কেননা সঠিক দিক নির্দেশনা না থাকলে অনেক জায়গায় বিপদে পড়তে পারেন তাই কোথায় থাকবেন কিভাবে যাবেন কি খাবেন সঙ্গে কি কি নিবেন  আশা করি বুঝতে পেরেছেন এরপরও যদি কোন রকমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা সম্পূর্ণ ভাবে আপনাদেরকে সঠিক তথ্য দিয়েই হেল্প করব

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনের নিকট অবশ্যই ফলো দিয়ে শেয়ার করে দিবেন কারণ আমরা এরকম আর্টিকেল প্রতিদিনই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে যাতে হাজারো দর্শণার্থীদের উপকারে আসতে পারি এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের যাত্রা শুভ হোক।