সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে আরেক নাম - ভ্রমণ গাইড

ডাবল হ্যান্ড ভিউ পয়েন্ট বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুনপ্রিয় পাঠক আপনি কি সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে আরেক নাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাহলে চলুন নিচের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে আরেক নাম যা বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায়  সমুদ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ ফুট উচ্চতায় এই পর্যটন কেন্দ্রটি অবস্থিত এখনো আবহাওয়াতে ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করবে।

পেজ সূচিপত্রঃসুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে আরেক নাম এ সম্পর্কে জানতে পড়ুন

• সুখিয়া ভ্যালি বান্দরবান
• সুখিয়া ভ্যালি নামকরণ
• সুখিয়া ভ্যালিতে যা যা দেখবেন
• ভ্রমণের সেরা সময় কখন
• সুখিয়া ভ্যালিতে সময় কাটাবেন যেভাবে
• সুখিয়া ভ্যালি যাওয়ার উপায়
• ঢাকা থেকে বান্দরবান পৌঁছাতে কত সময় লাগে
• সুখিয়াভেলি পৌঁছানোর পরে আপনার করণীয়
• সুখিয়া ভ্যালিতে খাবেন কোথায়
• সুখিয়া ভ্যালীতে থাকবেন কোথায়
• সতর্কতা অবলম্বন 
• প্রশ্নোত্তর পর্ব
• আমাদের শেষ কথা

সুখিয়া ভ্যালি বান্দরবান

সুখিয়া ভ্যালি বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র আপনার জন্য যেখানে প্রকৃতির আগম আহবানে অপেক্ষায় রয়েছে এখানে যেকোনো  ভ্রমণ পিপাসু প্রকৃতির প্রেমে এবং শান্ত পরিবেশে সুখের ভ্রমণে হারিয়ে যাবে যা প্রায় ১৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এখানে সকালের সূর্যোদয় এবং বিকেলের সূর্যাস্ত সহ চারি পাশের সবুজ শ্যামল ঘন বন জঙ্গল ও তার পাশ দিয়ে বয়ে চলা মাতা মুহুরী নদীর দৃশ্য এ যেন এক অপূর্ব স্বর্গীয় লীলাভূমি রাজ্য যা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অসম্ভব সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বলায় যেতে পারে।

সুখিয়া ভ্যালি একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রয়েছে সেটি হলে ওয়াজ টাওয়ার যেখান থেকে মাথা মোহরি নদীর বয়ে চলার দৃশ্য দেখা যায় এই টাওয়ারের পাশে আছে জুম ঘর ও ক্যাম্পিং করার জায়গা ওয়াচ টাওয়ারের দুইপাশে আছে সুখিয়া ও দুখিয়া পাহাড় যেখান থেকে পর্যটকগণ অ্যাডভেঞ্চার করতে পছন্দ করে এবং হিল হাইকিং ও ট্রাকিং করার জন্য আছে সুব্যবস্থা

এছাড়াও মাথা মুহুরী নদী থেকে আপনি ঘুরে দেখতে পারবেন সুন্দর সুন্দর স্পটসমূহ যা আপনাকে বাড়তি আনন্দ দিবে দেখতে পাবেন মিনি ঝরনা পাড়া সাদা পাহাড় শুখিয়া-দুখিয়া পাহাড় ছাড়াও আরো অনেক আকর্ষণের স্পট সমূহ

আরো পড়ুনঃরাজবাড়ি জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনা ও সাংস্কৃতি এবং যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন 

সুখিয়া ভ্যালি লামাতে আছে মিরিঞ্জা ভ্যালি এই ভ্যালি সুখিয়াভ্যালির মতই আকর্ষণীয় তবে এ ভ্যালিতে তেমন কোন ভালো মানের রিসোর্ট ও কটেজ নেই যার কারণে মাতামহুরি নদীর ভিউ দেখার ইচ্ছা এবং মেঘ দেখার পাশাপাশি সুখের রাজ্য বলা যায়, সুখিয়া ভ্যালিকেই।

সুখিয়া ভ্যালি নামকরণ

সুখিয়া ভ্যালি নামকরণের পিছনে অন্যতম কারণ হলো সাংস্কৃতি ও ইতিহাস আছে চলুন এ সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক

সুখিয়া শব্দের অর্থ হল সখি অর্থাৎ প্রিয় বান্ধবী বা ঘনিষ্ঠ নারী সঙ্গী সুখিয়া শব্দটি এই শব্দ থেকে এসেছে যার মানে হল প্রিয় সঙ্গিনী বা ভালোবাসার সাথী এবং ভ্যালি শব্দের অর্থ কোন এক নির্দিষ্ট এলাকে বোঝায় বা প্রান্তরকে বোঝায় যেটা প্রকৃতির সাথে স্থানীয় সম্পর্কিত অনেক সময় ভ্যালি শব্দটি মাঠ এবং দিঘিকে  বুঝিয়ে থাকে

সুখিয়া ভ্যালি নামকরনের মিলিত অর্থ হলো সখীর প্রান্তর বা প্রেমিক প্রেমিকার মিলন স্থান এমন কোন স্থানকে বুঝায় যেটা অতীতে প্রেম বন্ধু আবেগের পরিচিত হিসেবে ছিল

স্থানীয়দের কথা মতে প্রেমিক যুগলের স্মৃতিকে ঘিরে এই স্থানটির নামকরণ করা হয় সুখিয়া ভ্যালি এই স্থানটিতে অতীতে কোন এক প্রেমের কাহিনী বা আবেগ ঘন ঘটনা ঘটেছিল তাই স্থানটির নাম পরবর্তীতে সুখিয়া ভ্যালি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

সুখিয়া ভ্যালিতে যা যা দেখবেন

সুখিয়া ভ্যালি বান্দরবান জেলার একটি মনোরম পাহাড়ি এলাকা যা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অসাধারণ ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে প্রকৃতিক নিরবতা পাহাড়ের সৌন্দর্য ও ঝর্ণা সুরে হারিয়ে যাবেন আনন্দঘন মুহূর্তে নিচে সুখিয়া ভ্যালিতে যা যা দেখার আছে সেগুলো তুলে ধরা হলো

সবুজ পাহাড়ের সারি

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের আরেক নাম কারণ এই স্থানটির চারিপাশে সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্য চোখ জুড়িয়ে যায় সকালে ঘন কুয়াশা মেঘের অন্তরালে বিশাল পাহাড় ঢেকে থাকে এ যেন এক মেঘের রাজ্য উঁচু-নিচু এই পাহাড়ের সারি বেলা উঠার সাথে সাথে নতুন রূপে সেজে থাকে যা সূর্যের কিরণে দর্শনার্থীদের মনে আনন্দের আলাদা জায়গা করে নেয় এর পাশাপাশি নিরব নিস্তব্ধতা দূর হয়ে পাখির গুঞ্জর জাগিয়ে তুলে সমস্ত পাহাড় কে।

মেঘের রাজ্যের খেলা

সুখিয়া ভ্যালি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণীয় দৃশ্য হলো মেঘের রাজ্যে খেলা সকালে ঘন কুয়াশা এবং বিকালে মেঘে ঢাকা পাহাড় একে ছোট নীলগিরি হিসেবেও ডাকা যায় কারণ যতদূর চোখ যায় শুধু কুয়াশা আর ঘন কুয়াশা এ যেন মেঘে মেঘে নৃত্য করে যায় মেঘের রাজ্যে

আদিবাসীদের গ্রাম

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের আরেক নাম যেটা দেখবেন আদিবাসীদের গ্রামের মধ্যে তাদের জীবনযাত্রা পোশাক ও সাংস্কৃতি দর্শনার্থীদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় এখানে কয়েক রকমের আদিবাসী বসবাস করে তার মধ্যে অন্যতম হলো চাকমা মারমা ম্রৌ ও বম সম্প্রদায় যারা সব সময় পর্যটন প্রেমী হয়ে থাকে।

ছোট ছোট ঝর্ণা ধারা

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে স্বাগতম জানাবে ছোট ছোট ঝর্ণা এই ভ্যালির আশেপাশে অনেকগুলো ছোট ছোট ঝর্ণাধারা রয়েছে যা বর্ষা মৌসুমে এই ঝর্ণা গুলো আরো জীবন্ত হয়ে ওঠে নীরবে নিস্তব্ধে বয়ে চলে সারাক্ষণ এই ঝর্ণাধারা যা আপনার মনের ক্লান্তি দূর করে এনে দিবে অনাবিল আনন্দ ও সুখের মুহূর্ত সবসময়ের জন্য এখানে এসে আপনার ভ্রমণ পূর্ণতা পাবে।

সূর্যদয় ও সূর্যাস্ত

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের আরেক নাম কারণ পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্য উঠা এবং মুহূর্তের মধ্যে সূর্য ডোবার শক্তি এক অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে সূর্যাস্তের রক্ত আবহাওয়া চোখে মুখে রক্তিম রং রেখে দিয়ে হঠাৎ করে ডুবে যাবে নিমিষে ঘনিয়া আসবে অন্ধকার যে দৃশ্যটা সত্যি ভোলার নয়।

ট্রাকিং ও অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে অ্যাডভ্যাঞ্ছার ও টকিং করার যা অন্যান্য জায়গায় পাবেন না পাহাড়ি রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে ধীরে ধীরে প্রকৃতির কাছাকাছি এ যেন এক দারুন অভিজ্ঞতার পূর্ণতা ভ্রমন পিপাসুদের কাছে এই সুযোগ সব সময় সব জায়গায় হয়ে ওঠে না।

বন্য পশু পাখি দেখা

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের আরেক যা এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছেবন্য পশু পাখির সাথে দেখা করা এবং মাঝে মাঝে গাছের মগডালে দেখা মেলে বানরের ও আমরাও এমনই একটি বানরের দেখা পেয়েছিলাম যা এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে তাছাড়া তো পাখি অহরহ দেখেছিলাম সত্যিই এজন্য এক অন্যরকম সুখ এনে দেয় এই সুখিয়াভেলি।

ফটো তোলার স্পট

সুখিয়া ভ্যালি আপনার স্মৃতিকে আরও সুখময় করে ধরে রাখার জন্য তুলতে পারবেন পাহাড়ের চূড়ায় স্পষ্ট ফটো এছাড়াও মেঘের রাজ্যে দাঁড়িয়ে থেকে গাছ পালার সঙ্গে ফটোশুট করা অন্যতম এক আনন্দ দায়ক মুহূর্ত গ্রাম্য আদিবাসীদের সঙ্গে ফটোশুট করে পাবেন আলাদা আনন্দের অনুভূতি এছাড়াও রয়েছে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সঙ্গে ফটোশুটের অপূর্ব এক লীলাভূমের দৃশ্য যেটা শুধুমাত্র শুখিয়া ভ্যালীতে আছে।

ভ্রমণের সেরা সময় কখন

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণের আরেক নাম তবে আপনাকে সেরা সময় বাছাই করতে হবে সুখিয়াভেলির পর্যটনদের কাছে সেরা সময় হলো শীতকাল নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তাছাড়া অন্যান্য সময়ও এখানকার আবহাওয়া মোটামুটি ভালই পাওয়া যায় তবে মেঘের দৃশ্য দেখতে হলে এ সময় ভ্রমন করা ভালো এ সময় ভ্রমণ করলে পেয়ে যাবেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব  লীলাভূমি উপভোগ করার সুযোগ।

সুখিয়া ভ্যালিতে সময় কাটাবেন যেভাবে

সুখিয়া ভ্যালি সময় কাটানোর জন্য লুকানো এক স্বর্গ প্রাকৃতিক নিস্তব্ধতা ও পাহাড়ের কোলে সবুজের আবরণে ঘেরা সুখিয়া ভ্যালি আমরা বান্দরবানের এক লুকানো স্বর্গে কিভাবে সময় কাটাবো এ বিষয়ে থাকতে নিচে বিস্তারিত

মাচাং ঘরে অবস্থান

সুখিয়া ভ্যালিতে সময় কাটানোর জন্য বিশ্রামাগার হিসেবে থাকছে উপজাতিদের মাচান ঘর সারাদিন ঘোরাঘুরির পর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবেন তখন এই জায়গায় সময় কাটানো যায় দুপুর ক্লান্ত দুপুরে মিষ্টি মেধু বাতাস আপনাকে কখন মিষ্টি ঘুমিয়ে নিয়ে চলে যাবে আপনার অজান্তে তা আপনি অনুভব করতে পারবেন না তাই মাচাং ঘরে অবস্থান করা এটা আপনাকে এনে দিবে অভিজ্ঞতার এক উপহার।

ফটোগ্রাফি করা

সুখিয়া ভ্যালিতে কুয়াশায় ঢাকা পাহাড় চা হাতে বসে সূর্যোদয় দেখা ও পাখির ডাক সবমিলিয়ে  প্রাকৃতিক মোহনীয় দৃশ্য এ যেন এক রূপকথার গল্প একে নিতে পারবেন ক্যামেরায়

 নদীতে নৌকো ভ্রমণ

সুখিয়া ভ্যালি নৌকা ভ্রমণ মাতাহুরি নদীতে আনন্দর এক অপূর্ব লীলাভূমি এনে দেবে কারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের সঙ্গে স্বচ্ছ নীল পানি চারিদিকে পাহাড় এ যেন এক কবিতার মত ছন্দ এঁকে দিতে পারবে আপনার মনের মধ্যে

আরো পড়ুনঃকরটিয়া জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইল যাওয়ার উপায় সম্পর্কে  জানুন

স্থানীয় খাবার টেস্ট করা

সুখিয়া ভ্যালি পাহাড়িয়া স্থানীয়দের সাথে রান্নার স্বাদ নিতে পারবেন এই খাবারগুলো রান্না করা হয় সম্পূর্ণ নির্ভেজাল ভাবে যার সাধ একবার খেলে সারাজীবন মনে রাখবেন

রাতে ক্যাম্প ও ফায়ার গান

সুখিয়া ভ্যালি রাত্রি যাপনের জন্য বন্ধুদের নিয়ে করা যাবে ক্যাম্প ফায়ার পাশে থাকবে গিটার পাহাড়ি হাওয়া আর তারা ভরা রাত এর চেয়ে সুন্দর সময় আর কি হতে পারে রাত কাটানোর জন্য

সুখিয়া ভ্যালি যাওয়ার উপায়

সুখিয়া ভ্যালি বান্দরবানে  এক নতুন লুকানো সৌন্দর্যনিচে সুন্দরভাবে জানানো হচ্ছে ঢাকা থেকে বান্দরবান শহরে এবং বান্দরবান থেকে সুখিয়া ভ্যালি কিভাবে যাবেন তার উপায় সম্পর্কে

ঢাকা থেকে বান্দরবান যাত্রা

বাসে করে যাওয়া

ঢাকা কল্যাণপুর সায়দাবাদ ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে সরাসরি বান্দরবান গামী এসি নন এসি বাস পাওয়া যায় জনপ্রিয় বাস এস আলম হানিফ শ্যামলী ইউনিক সেন্ট মার্টিন দেশ  ট্রাভেল ইত্যাদি তবে

ভাড়া নন এসির বাসের ভাড়া ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা

ঢাকা থেকে বান্দরবান পৌঁছাতে কত সময় লাগে

ঢাকা থেকে বান্দরবান পৌঁছাতে google ম্যাপ অনুযায়ী বাসে সময় লাগে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা তবে রাস্তায় জ্যাম অথবা অন্য কোন সমস্যা থাকলে সময় বেশি লাগতে পারে। এছাড়াও নিজের প্রাইভেট কার কিংবা বাইক থাকলে আরো সময় কম লাগবে এক্ষেত্রে ছয় থেকে সাত ঘন্টা সময় লাগে

বিমানে গেলে ৪৫ মিনিট সময় লাগে ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে এখান থেকে সুখিয়াভেলি যেতে হবে

বান্দরবান থেকে সুখিয়া ভেলি

সুখিয়া ভ্যালি  বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি ফ্রান্সে এবং রুমা রোডের কাছাকাছি পাহাড়ের এক চমৎকার ভ্যালি অঞ্চল যেভাবে যাবেন সুখিয়াভেলি বান্দরবান থেকে চলুন নিচে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

প্রাইভেট কারে বা চাঁদের গাড়ি অথবা জিপে যেতে পারেন  চাদের গাড়িতে ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী যেতে পারবেন আসা যাওয়া মিলিয়ে ভাড়া চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিতে পারে চালকেরা স্থান চেনে এজন্য দিক নির্দেশনা কোন ভয়ের কারণ নেই সঙ্গে গাইড থাকলে আরো ভালো হয়

আরো পড়ুনঃপ্রকৃতির ভূস্বর্গ বান্দরবান টাইটানিক ভিউ পয়েন্ট -ভ্রমণ গাইড

মোটরবাইক

 আপনারা চাইলে দুইজন মোটরসাইকেলে যেতে পারেন এক্ষেত্রে ২৫০ টাকা বা পুরো যাত্রার জন্য ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা নিবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে রাস্তা কিন্তু পাহাড়ি সাবধানে চলাফেরা করতে হবে

সুখিয়াভেলি পৌঁছানোর পরে আপনার করণীয়

সুখিয়া ভেলি পৌঁছানোর পরে আপনি পায়ে হেঁটে কিংবা মোটরবাইকে শুকিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন এজন্য আলাদাভাবে কোন টিকিট কাটার প্রয়োজন নেই তবে স্থানীয়দের জন্য নির্ধারিত ২০ থেকে ৩০ টাকা ফ্রি থাকতে পারে এর ভিতরে ছোট্ট দোকানপাট ও খাবারের জায়গা এবং ফটোশুটের স্পট রয়েছে এখানে সময় কাটানোর সেরা মুহূর্ত হলো সকালে এবং বিকাল বেলা।

সুখিয়া ভ্যালিতে খাবেন কোথায়

সুখিয়া ভ্যালিতে ঘুরতে গেলে তো খেতেই হবে এজন্য জানা খুব জরুরী কারণ পাহাড়ি এলাকায় খাবার পাওয়া খুব মুশকিল নিচে বিস্তারিত হবে চলুন জেনে নেয়া যাক

সুখিয়া ভ্যালির ভেতরে ছোট্ট ছোট্ট দোকানপাট রয়েছে যেখান থেকে স্থানীয় রা চা-বিস্কুট খেয়ে থাকে এছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য কিছু স্পেশাল খাবার রয়েছে যেমন কফি চানাচুর বিস্কুট পাউরুটি সেদ্ধ ডিম ভর্তা ভাত ডাল ও দেশি মাছের তরকারি তবে অবশ্যই আপনাকে দুপুরের খাবারের অর্ডার করতে হবে

এছাড়াও আপনি চাইলে বান্দরবান শহরে খাওয়া দাওয়া করে নিতে পারেন সকাল সকাল বান্দরবান শহর থেকে নাস্তা করে বের হয়ে যাবেন এবং তাহলে দুপুরের খাবার আপনি বান্দরবানে এসে খেতে পারবেন কয়েকটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের নাম নিচে তুলে ধরা হলো যেমন

রেস্টুরেন্ট হিলভিউ

রেস্টুরেন্ট ভালো মানের খাবার পাওয়া যায় যেমন খাবার ভাত মুরগি গরু সবজি পার্বত্য খাবার ইত্যাদি

দাম সাধারণভাবে লাঞ্চে ২০০ থেকে ৩০০টাকা

আর পাহাড়ি রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করলে লাগবে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা এখানে জনপ্রিয় খাবার হল বাসের ভর্তা ও স্থানীয় ঝাল খাবার

রূপসী বান্দরবান হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট

রূপশ্রী বান্দরবান হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে খেতে চাইলে আপনাকে অগ্রিম অর্ডার করা লাগবে এখানে টুরিস্ট এর গ্রুপের জন্য ভালো মানের খাবার তৈরি করা হয়ে থাকে এখানে খেতে হলে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা মধ্যে খাবার হয়ে যাবে

গ্রীন ভ্যালি রেস্টুরেন্ট

সুন্দর সুন্দর ভিউসহ খোলা জায়গায় বসার ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে স্পেশাল ভাবে পাহাড়ি মুরগি দেশি মাছ গরুর মাংস সেখানকার বিভিন্ন রকমের ভর্তা সহ রুচিশীল খাবারের ব্যবস্থা আছে। 

রিসোর্ট বা কটেজে খাওয়া দাওয়া

সুখিয়া ভ্যালি কাছাকাছি কিছু রিসোর্ট বা কটেজ রয়েছে সেখানে আপনি ইচ্ছে করলে থাকা সহ খাওয়া-দাওয়া উভয় করতে পারবেন তবে সেখানে আগে বুকিং দিতে হবে লাঞ্চ বা ডিনারের জন্য এখানে উন্নত মানের খাবার পাওয়া যায় যেমন বেশি ভাত ডাল মুরগি মাছ আলু ভর্তা ডিম চাইলে পাহাড়ি খাবারও অর্ডার করতে পারেন খাবারের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত

সঙ্গে খাবার নিয়ে যাওয়া

আপনারা চাইলে সুখিয়া ভ্যালিতে খাবার নিয়ে যেয়ে খেতে পারেন দিন গিয়ে দিন ফিরে আসার জন্য যেমন সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসা ক্ষেত্রে সকালে খাবার বেঁধে নিয়ে রওনা দিতে পারেন সুখিয়া ভ্যালির উদ্দেশ্যে ভাত পোলাও ডিম মুরগি মাছ পানির জুস বিস্কুট ছোট পিকনিক লাঞ্চ বাক্স নিতে পারেন। গরমের সময় গেলে অবশ্যই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি রাখবেন

সুখিয়া ভ্যালীতে থাকবেন কোথায়

সুখিয়া ভ্যালিতে থাকার জন্য ছোট ছোট রিসোর্ট রয়েছে সে রিসোর্টে আপনি চাইলে থাকতে পারেন এখানে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে চলুন নিচে সুখিয়াভেলিতে থাকার কিছু রিসোর্টের নাম জেনে নেওয়া যাক যেমন

শুখিয়াভেলি ইকো কটেজ

অবস্থান একেবারে পয়েন্টের কাছে আপনি গেলে চোখে পড়বে কটেজে রুম কাঠের কটের দুই থেকে চারজন ক্ষমতা আছে এর বেশি নয়

সুবিধা সমূহ

 নিজস্ব ভিউ পয়েন্ট

হোম মেড খাবার

বারান্দা থেকে পাহাড়ের দৃশ্য দেখা

ভাড়া প্রতিরাতে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

গ্রীন ভিউ কার্টেজ

সুখিয়া ভ্যালি   রোড সংলগ্ন বান্দরবান থানচি রোডে অবস্থিত রুম ডাবল ত্রিপুল বেড পাওয়া যায়

সুবিধা সমূহ

সোলার লাইট স্থানীয় খাবার

বাইক পার্কিং

ছাদ থেকে সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা

ভাড়া ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত

এছাড়া সুন্দরবনে থাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ হোটেল রয়েছে চলুন সেসব হোটেল সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক

হোটেল হিল ভিউ

বান্দরবান শহরের সবচাইতে পরিচিত হোটেল রুম ভাড়া ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে

হলিডে ইন রিসোর্ট

আরামদায়ক পরিবেশ ও সুন্দর ভিউ উপভোগ করার জন্য এই রিসোর্ট খুবই ভালো হবে

রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা

এছাড়া আপনারা চাইলে তাবু গেড়ে থাকতে পারেন সে ক্ষেত্রে তাদের ওয়াজ টাওয়ারে তাবু পিচ করতে হবে ভাড়া লাগবে দেড়শ টাকা আর যদি পাবো তাদের কাছ থেকে ভাড়া দেন সে ক্ষেত্রে সর্বমোট ৩০০ টাকা দিতে হবে তার মধ্যে দুই থেকে তিনজন থাকতে পারবে এছাড়াও আপনাদের লামা উপজেলায় থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে কম খরচে সেখানে থাকতে পারবেন

সতর্কতা অবলম্বন 

সুখিয়া ভ্যালি থাকার জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে চলন কি কি সর্তকতা অবলম্বন  করা যায় জেনে নেয়া যাক

পাহাড়ে চলাফেরা করার সময় অবশ্য সতর্কতা থাকতে হবে কারণ এই সময় রাস্তার পিচ্ছিল থাকে

স্থানীয় জনগণের সাংস্কৃতি নিয়ে হাসির ঠাট্টা তামাশা করা যাবে না তাদেরকে সম্মান দেখাতে হবে

সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও হালকা খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি রাখতে হবে

শুকনো কাপ জামাকাপড় সঙ্গে রাখতে হবে এর সাথে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখতে হবে

সর্বশেষ গাইডের তথ্য অনুযায়ী চলাফেরা করতে হবে 

সঙ্গে অবশ্যই নগদ টাকা-পয়সা রাখতে হবে

লামা উপজেলায় সেনাবাহিনী চেকপোস্ট রয়েছে সেখানে আপনার এনআইডি কার্ডের পরিচয় পত্র ফটোকপি এবং ট্রাকিং এর সময় ভালো গ্রিপের জুতা ও মার্ক  সঙ্গে নিয়ে নিবেন এছাড়াও নৌকা ভ্রমণের সময় কি কি স্পট ঘুরে দেখবেন সেগুলো ভালো করে যাচাই-বাছাই করে নিবেন।

আরো পড়ুনঃপুরান ঢাকার লালকুঠি  ফিরে পাচ্ছে পুরনো জৌলুস 

দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি হোটেল রিসোর্ট যানবাহনের ভাড়া অন্যান্য খরচের সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে পারে এজন্য গাইডের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমান সময়ের সাথে মিলে নাও থাকতে পারে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি বর্তমানে পুরো তথ্যগুলো জেনে বুঝে হোটেল রিসার্চ যানবাহনের যোগাযোগ ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে জেনে নিতে পারেন আর্থিক লেনদেন করার আগে অবশ্যই সম্পূর্ণ যাচাই-বাছাই করে নেবেন না হলে পরবর্তীতে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

প্রশ্নোত্তর পর্ব

প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু প্রশ্ন উত্তর পর্ব করা হয়েছে নিচে চলুন জেনে নেওয়া যাক

সুখিয়া ভ্যালি কোথায় অবস্থিত

সুকিয়াভেলি বান্দরবান জেলার থানচি রোডের পাশে রুমা উপজেলায় অবস্থিত

কি কি দেখার আছে

এখানে ছোট্ট ছোট্ট ঝর্ণা সবুজ পাহাড় ভোরের কুয়াশা আর মেঘের খেলা সব মিলিয়ে সুন্দর এক অনুভূতি

সুকিয়াভেলিতে যাওয়ার উপায় কি

ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান যেতে হবে বান্দরবন থেকে সরাসরি জিপে চাঁদের গাড়িতে চুকিয়াভেলি যাওয়া যায়

সুকিয়াভেলিতে থাকার ব্যবস্থা আছে কি

অবশ্যই হ্যাঁ আছে ভ্যালির আশেপাশে কয়েকটি ছোট ছোট রয়েছে সেখানে থাকতে পারেন

আমাদের শেষ কথা

সুখিয়া ভ্যালি পর্যটনদের সুখের ভ্রমণে আরেক নামসম্পর্কে আজকে আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এরপরও যদি আপনাদের কোন রকমের প্রবলেম হয় তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদেরকে উপকৃত করা হবে 

শুখিয়াভেলিয়া আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধুবান্ধবের কাছে শেয়ার করে দিবেন যাতে করে তাদের অবসর বা ক্লান্ত সময়টুকুন এই জায়গাটিকে কাটিয়ে আসতে পারে আজকের এই আর্টিকেলটি ফলো দিয়ে আমাদের এদের সঙ্গে থাকুন আর এ রকম আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে একবার করে হলেও ভিজিট করুন এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।