রেমাক্রি জলপ্রপাত অপার সৌন্দর্যের ধারা বান্দরবান ভ্রমণ গাইড

ঢাকা টু বান্দরবান এর দূরত্ব ৩৩০ থেকে ৩৮৭ কিলোমিটার

ঢাকা টু বান্দরবান যেতে সময় লাগে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা জ্যাম থাকলে আরো একটু সময় বেশি লাগবে

আরো পড়ুনঃসাবরাং ট্যুরিজম ইকোপার্ক পর্যটন কেন্দ্রের দ্বার উন্মোচন ও ভ্রমণ গাইড

ঢাকা টু বান্দরবান বাসের টিকিটের মূল্য হল ৮৫০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত এসি এবং নন এসি সহ লা লাক্সারি স্লিপার ইত্যাদি দিয়ে বেছে নিতে পারেন সঠিক সিট

ঢাকা টু বান্দরবান ট্রেনের সময়সূচী

ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পারবেন ট্রেনের সময় লাগবে সাড়ে চার ঘন্টা থেকে সাত ঘন্টা মত চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান তিন ঘন্টা সময় লাগে এবং বান্দরবান থেকে মাইক্রোবাসে যোগে থানচি পৌঁছাতে হবে

ট্রেনের নাম	রুট	ছাড়ার সময়	সময় লাগবে	বন্ধের দিন
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস	ঢাকা টু চট্টগ্রাম	সকাল ৭ টা	সকাল ১১ঃ৫৫ পঞ্চান্ন মিনিট	বুধবার
সুবর্ণ এক্সপ্রেস	ঢাকা টু চট্টগ্রাম	বিকাল ৪ঃ৩০ মিনিট	রাত্রি ৯ঃ ২৫ মিনিট	সোমবার
মহানগর প্রভাতী	ঢাকা টু চট্টগ্রাম	সকাল ৭ঃ৪৫ মিনিট	রাত্রী১ঃ ৩৫ মিনিট	প্রতিদিন বন্ধ নেই
চট্রলা এক্সপ্রেস	ঢাকা টু চট্টগ্রাম	দুপুর ১ঃ ৪৫ মিনিট	রাত৮ঃ১০ মিনিট	শুক্রবার

বিমানে ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার উপায়

ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গিয়ে নামতে হবে ফ্লাইটে  ১ ঘন্টা সময় লাগবে এখানে সড়কপথে বান্দরবান আসতে হবে সময় লাগবে তিন ঘন্টা থেকে চার ঘন্টা মাইক্রোবাসে

টিকিটের মূল্য ৩৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকা

রেমাক্রি থেকে থানচি

বান্দরবান থানচি উপজেলায় পৌঁছে যাওয়ার পরে এখান থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে রেমাক্রি বাজার থানচি থেকে রেমাক্রি যেতে হলে গহীন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় ৪ থেকে ৫ জনের সদস্য নিয়ে ছোট্ট ইঞ্জিনে যেতে হবে রেমাক্রি রিজাব ৪৫০০টাকা যাওয়া আসা ভাড়া নিবে রেমাক্রি নদীর ঘাটে ঘাটে এই ছোট্ট ছোট্ট ইঞ্জিনিয়ার ৫০ টিরও বেশি ডিঙিয়ে নৌকা রয়েছে

সাঙ্গু নদীর উত্তাল ঢেউয়ের বিপরীতে ছুটে চলবে এই নৌকা গুলি কি শুধু যাওয়ার পরে স্বচ্ছ পানির নিচে পাথরের স্তুপ পড়ে আছে হঠাৎ নৌকা পাথরে আটকে যাবে নৌকার মাঝে এখানে নেমে হাঁটু পানি হবে নৌকা খেলা দিয়ে আবার পানির মধ্যে নিয়ে দিবে ছুট এভাবে প্রায় দুই ঘন্টার উপরে সময় লাগবে রেমাক্রি  বাজার যেতে এ রাস্তার মধ্যে যেতে যেতে পড়বে রাজা পাথর রানী পাথর সহ বিভিন্ন রকমের বড় বড় পাথরের পাহাড় মনে হবে পাথরগুলো কখন জানি হঠাৎ গায়ে এসে পড়ে কিন্তু শত শত বছর ধরে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে নৌকা চলাচলে পাথরে ঘর্ষণ লেগে পাথর পর্যন্ত ক্ষয় হয়ে গেছে

আরো পড়ুনঃমোটরসাইকেল ভ্রমণ লক্ষ্যে দেশের নিরাপদ সড়কগুলো সম্পর্কে জানুন

থেমে থেমে নৌকা চলছে হঠাৎ সামনে পড়বে তিন্দু বাজার থানচির যে সমস্ত ইউনিয়নগুলো রয়েছে তার মধ্যে একটি এই তিন্দু তিন বাজার এখানে বাস করে মারমা মুরো বোম খেয়াং কুমি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের উপজাতীয় লোকজন যেতে যেতে হঠাৎ দেখতে পাবেন জুমের ফসল কলার বাগান তিন্দু বাজারে পাশে চিংড়ি ঝরনা সামনে রয়েছে রাজা পাথর যেখানে এসে এই উপজাতিরা পূজার্চনা করে একটু দূরে কুমারী ঝরনা এ ঝর্ণাটি সীতার পাহাড় হিসেবে নামকরণ করা হয় এখান থেকে সামনে মাত্র ১৫ কিলোমিটার গেলে পেয়ে যাবেন রেমাক্রি বাজার এ বাজারের দক্ষিণ পাশে দেখতে পাবেন সেই প্রত্যাশিত জলপ্রপাত রেমাক্রি।

রেমাক্রি জলপ্রপাত গিয়ে কোথায় থাকবেন 

রেমাক্রি জলপ্রপাত থানচি উপজেলার বান্দরবান জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার সাঙ্গু নদীর তীরে অবস্থিত তাই রেমাক্রি জলপ্রপাত থাকার জন্য তেমন কোন ভালো মানের হোটেল পাবেন না এখানে থাকতে হলে

থানচি রেস্ট হাউসে থাকতে পারেন খানচি বাজারের কাছে অবস্থিত এখানে পাবেন সরকারি মানের ভালো রুম ও বিদ্যুৎ গরম পানির সোলার সবকিছুই হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন 

রুম ভাড়া নিবে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত

রয়েল হিল রিসোর্ট

থানচি বাজার সংলগ্ন এই রয়েল হিল রিসোর্ট এর অবস্থান এখানে পাবেন ব্যালকনিযুক্ত রুম নদীর ভিউ উপভোগ করার সুযোগ আর রেস্টুরেন্টের সুবিধা

রুম ভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা

মেসাস থানচি গেস্ট হাউস

থানচি ঘাটের পাশে অবস্থিত এখানে ফ্যামিলি রুম পাবেন ভাড়া ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত

রেমাক্রি জলপ্রপাত এর পাশে থাকার ব্যবস্থা

রেমাক্রি জলপ্রপাত এ পর্যটকদের জন্য উন্নতমানের হোটেল নেই তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বানানো জন্য ট্রাইবাল হোমেস্ট আছে

এটা বাঁশের তৈরি মাচা যার ছোট ছোট রুম রয়েছে ভাড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত

রেমাক্রি বাজারে কোথায় খাবেন

রেমাক্রি বাজারে ছোট ছোট হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে ভাত ভর্তা ভাজি ডিম ও সবজি এখানকার প্রধান খাবার মুরগির মাংস পাবেন এখানে খেতে হলে আপনাকে অগ্রিম টাকা দিয়ে অর্ডার করতে হবে কোন থেকে খাবারের কোন ব্যবস্থা আপনি করতে পারবেন না এই স্থানীয়ভাবে রান্নার সব স্বাদ আপনি পাবেন এই খাবারে।

১২০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে খাবার হয়ে যাবে

মোটকথা একজন ব্যক্তির ঢাকা থেকে বান্দরবান, বান্দরবন থেকে থানচি ,থানচি থেকে রেমাক্রি বাজার থাকা খাওয়া দিয়ে সর্বমোট খরচ হবে ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সাধারণ ভাবে। 

সঙ্গে যা যা নিতে হবে

হালকা কাপড়চোপড় নিতে হবে

এক সেট শুকনো কাপড় নিতে হবে

রেনকোট বা ছাতার সঙ্গে রাখলে ভালো হয়

তোয়ালে বা ছোট গামছা সঙ্গে রাখবেন

ওয়াটারপ্রুফ জুতো পায়ে দিবেন

সানগ্লাস ও টুপি সঙ্গে রাখবেন

ওষুধপত্র প্যারাসিটামল ব্যান্ডেজ গ্যাসের ওষুধ মশা নিরোধক স্প্রে সঙ্গে রাখবেন

টুথপেস্ট টুথব্রাশ সাবান সঙ্গে রাখবেন

মোবাইলের পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখবেন আর অবশ্যই ফাইভ জি রবি সিম সঙ্গে রাখবেন এখানে গ্রামীন সিম সংযোগ পাবেন না

টর্চলাইট সঙ্গে রাখবেন

ক্যামেরার ব্যাটারি ফুল চার্জে রাখবেন

পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি সঙ্গে রাখবেন

ডকুমেন্টস হিসেবে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সঙ্গে রাখবেন

নগদ টাকা সঙ্গে রাখবেন

ময়লা যেখানে সেখানে ফেলবেন না

স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করবেন

গাইডে কথাবার্তা মেনে চলা

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান সমূহ

রেমাক্রি জলপ্রপাত গিয়ে আর কোথায় কোথায় ঘুরবেন বা দর্শনীয় স্থানসমূহ কোন কোন জায়গায় রয়েছে চলুন নিচের জেনে নেওয়া যাক

আমিয়াকুম জলপ্রপাত

নাফাকুম জলপ্রপাত

সাতভাই খুম জলপ্রপাত

থানচি বাজার ও সাঙ্গ নদী ভ্রমণ

সাঁইতার ঝরনা

বক্তলং ঝর্ণা

দার্জিলিং পাহাড় ও তাবাং পাহাড়

আরো পড়ুনঃশিমুল বাগান বসন্ত বরণের অপেক্ষায় সুনামগঞ্জ সিলেট ভ্রমণ গাইড 

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি রেমাক্রি জলপ্রপাত অপার সৌন্দর্যের ধারা বান্দরবান ভ্রমণ গাইড যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি করে শেয়ার করে দিবেন যাতে করে আপনাদের আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব এখানে এসে মনের সুখে কিছু ক্লান্তিময় সময় গুলো সুখময় করে যেতে পারে আজকের আর্টিকেলে রেমাক্রি জলপ্রপাত যাওয়ার জন্য যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে

আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এরপরও যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা সেগুলো সঠিক তথ্য দিয়ে উপকৃত করব এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ আর অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে প্রতিদিন ভিজিট করুন কারণ আমরা প্রতি দিনে এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল আপডেট দিয়ে থাকে ধন্যবাদ।